অনলাইন ডেস্ক :
জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের দারুণ দুটি ফিফটি ইংল্যান্ডকে এনে দিল লড়াইয়ের পুঁজি। গ্লেন ফিলিপস জবাব দিলেন বিস্ফোরক ইনিংস খেলে। তবে নিউ জিল্যান্ড যেতে পারল না লক্ষ্যের ধারেকাছে। দারুণ জয়ে এক নম্বর গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার লড়াইটা আরও জমিয়ে তুলল ইংলিশরা। ব্রিজবেনে মঙ্গলবার সুপার টুয়েলভ পর্বের ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় ২০ রানে। ১৭৯ রানের পুঁজি গড়ে কিউইদের ১৫৯ রানে আটকে দেয় বাটলারের দল। এই গ্রুপে সবার চারটি করে ম্যাচ শেষে তিন দলের পয়েন্ট সমান ৫ করে। নেট রানরেটে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড এখনও শীর্ষে, ইংল্যান্ড দুইয়ে, অস্ট্রেলিয়া তিনে আছে। শ্রীলঙ্কা ৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে, ৩ পয়েন্ট নিয়ে আয়ারল্যান্ড পাঁচে আছে। ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা আফগানিস্তান এরইমধ্যে ছিটকে গেছে লড়াই থেকে। শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে, ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, আর নিউ জিল্যান্ড মুখোমুখি হবে আয়ারল্যান্ডের। নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে দুইবার জীবন পেয়ে ৪৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ জয়ে নায়ক বাটলার। ইংলিশ অধিনায়কের ইনিংসটি গড়া ৭ চার ও ২ ছক্কায়। তার সঙ্গে ৮১ রানের উদ্বোধনী জুটির পথে হেলস করেন ৪০ বলে ৫২ রান। জবাবে শুরুতে দুই ওপেনারকে হারানোর পর কেন উইলিয়ামসন ও ফিলিপসের জুটিতে আশা জাগায় নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু ৫৯ বলে ৯১ রানের জুটি ভাঙার পর আর পেরে ওঠেনি তারা। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফিলিপস এবার একবার জীবন পেয়ে ৩৬ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় খেলেন ৬২ রানের ইনিংস। গত আসরের সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে খেলেছিল নিউ জিল্যান্ড। তাদের হারিয়ে সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিল ইংলিশরা। এই ম্যাচ জিতলে সেমি-ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত হয়ে যেত উইলিয়ামসনদের। সেখানে আসরে প্রথম হারের স্বাদ পেলেন তারা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার ওভারে ইংল্যান্ডের রান ছিল ২৫। এরপর টিম সাউদির একই ওভারে দুই চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে রানের গতিতে দম দেন হেলস। পাওয়ার-প্লেতে তারা তোলে ৪৮ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেই ৮ রানে বাটলারের ক্যাচ নিতে পারেননি উইলিয়ামসন। মিচেল স্যান্টনারকে বাউন্ডারি মেরে হেলস ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৯ বলে। পরের বলেই স্টাম্পড হয়ে শেষ হয় তার ৭ চার ও এক ছক্কায় গড়া ৫২ রানের ইনিংস। বাটলার আরেকবার জীবন পান ৪০ রানে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দারুণ সব শটে তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে। এ দিন ৬৪ রানে পৌঁছে ওয়েন মর্গ্যানকে ছাড়িয়ে এই সংস্করণে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে যান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তিনে নেমে টিকতে পারেননি মইন আলি। হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস পারেননি শেষের দাবি মেটাতে। ১৪ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২০ রান করেন লিয়াম লিভিংস্টোন। শেষের আগের ওভারে রান আউট হন বাটলার। নিউ জিল্যান্ডের তিন পেসারের সবাই এ দিন রান দেন ওভারপ্রতি ১০ এর বেশি। নিয়ন্ত্রিত ছিলেন কেবল দুই স্পিনার স্যান্টনার ও ইশ সোধি। রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ড দ্বিতীয় ওভারেই হারায় ডেভন কনওয়েকে। আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেন একটি ছক্কায় ১৬ রান করে থামেন পঞ্চম ওভারে। ২৮ রানে ২ উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড আরও চাপে পড়তে পারত। লেগ স্পিনার আদিল রশিদের বল আকাশে তুলে দেন ফিলিপস। কাভার থেকে কিছুটা সামনে দৌড়ে সহজ ক্যাচ মুঠোয় নিতে ব্যর্থ হন মইন। ১৬ রানে জীবন পেয়ে ফিলিপস তোলেন ঝড়। রশিদকে মারেন টানা দুই ছক্কা। উইলিয়ামসনের সঙ্গে জমে ওঠে তার জুটি। পঞ্চদশ ওভারে প্রথম আক্রমণে এসে উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে ৯১ রানের বিপজ্জনক জুটি ভাঙেন স্টোকস। কিউই অধিনায়ক ৪০ বলে করেন ৪০। শেষ পাঁচ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের দরকার ছিল ৫৭ রান। জেমস নিশাম ও ড্যারিল মিচেল টিকতেই পারেননি। সপ্তদশ ওভারে ফিলিপসও ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায় কিউইরা। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কারান ২৬ রানে ও ক্রিস ওকস ৩৩ রান দিয়ে নেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭৯/৬ (বাটলার ৭৩, হেলস ৫২, মইন ৫, লিভিংস্টোন ২০, ব্রুক ৭, স্টোকস ৮, কারান ৬*, মালান ৩*; বোল্ট ৪-০-৪০-০, সাউদি ৪-০-৪৩-১, স্যান্টনার ৪-০-২৫-১, ফার্গুসন ৪-০-৪৫-২, সোধি ৪-০-২৩-১)
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৫৯/৬ (অ্যালেন ১৬, কনওয়ে ৩, উইলিয়ামসন ৪০, ফিলিপস ৬২, নিশাম ৬, মিচেল ৩, স্যান্টনার ১৬*, সোধি ৬*; মইন ১-০-৪-০, ওকস ৪-০-৩৩-২, রশিদ ৪-০-৩৩-০, কারান ৪-০-২৬-২, উড ৩-০-২৫-১, লিভিংস্টোন ৩-০-২৬-০, স্টোকস ১-০-১০-১)
ফল: ইংল্যান্ড ২০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জস বাটলার
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা