নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে চলছে পাঠদান। এরইমধ্যে করোনার অভিঘাত মাথায় নিয়ে শেষ হচ্ছে আরও একটি শিক্ষাবর্ষ। নতুন বছর সামনে রেখে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিযুদ্ধে নামবেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো। রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরম বিতরণ হবে ডিসেম্বরের শুরুতে। আবেদন কার্যক্রম চলবে অনলাইনে। সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণির ভর্তি লটারিতে হলেও অন্যান্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলে জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালেও সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম ১৭০ টাকা আর বেসরকারিতে ২০০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবার শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন ফরম বিক্রি ও জমা অনলাইনে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হবে। ফলাফলও প্রকাশ হবে অনলাইনে। আগামী মাসের (নভেম্বর) শুরুতে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রকাশ হবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সরকারি বিদ্যালয়) সৈয়দ ইমামুল হোসেন বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নীতিমালার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত হবে। নীতিমালায় গত বছরের চেয়ে এ বছর বড় কোনো পরিবর্তন আসছে না। বেসরকারি ভর্তি নীতিমালার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বেসরকারি বিদ্যালয়) ফৌজিয়া জাফরীন বলেন, আগামী সপ্তাহে সভা করে নীতিমালা চূড়ান্ত হবে। এবার আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমার কাজ অনলাইনে করা যায় কি না, তা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে ২০২২ সালের শুরু থেকে অষ্টম শ্রেণির ভর্তি অনলাইনভিত্তিক করে নীতিমালা চূড়ান্ত হচ্ছে। লটারির স্বচ্ছতা আনতে ও সব ধরনের অনিয়ম এড়াতে তিন স্তরের কমিটি কাজ করবে। এ ছাড়া স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধি আলাদাভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া দেখভাল করবে। এবার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরমের মূল্য চলতি শিক্ষাবর্ষের মতো ২০০ টাকা নির্ধারণ থাকছে। করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি না বাড়িয়ে আগের মতো রাখা হচ্ছে। ঘোষিত শূন্য আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি ও নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত টিউশন ফির বেশি আদায় করা যাবে না। কোভিড-১৯ মহামারির সংক্রমণরোধে সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের পৌর শহর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা সশরীরে দিতে হবে না। শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে জমা দিতে পারবেন। আবেদন ফরম বিতরণের পর অন্তত সাত কার্যদিবস সময় দিতে হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ ও লটারির মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করবে। বেসরকারি স্কুলে ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবহির্ভূত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আবেদন ফরমের মূল্য ২০০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫০০ টাকা, পৌর (উপজেলা) এলাকায় এক হাজার ও পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার এবং রাজধানী ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি হবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না। একই এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নিতে পারবে। এ বিষয়ে মাউশি পরিচালক (বিদ্যালয়) বেলাল হোসাইন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ভর্তি নীতিমালায় লটারিসহ কয়েকটি বিষয় গত বছরের মতো রাখা হবে। ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি শুরুর আদেশ জারি হবে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রকাশের পর।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম