নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আলটিমেটাম দেয়া সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কঠোর হচ্ছে। সেজন ওসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিগত ২০১১ সাল থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে একের পর এক আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। কিন্তু এক যুগ পর আইন মেনে এখনো সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউজিসির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। বছরের শুরুতেই ওই নোটিশ দেয়া হয়। ওই নোটিশে বলা হয়, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। ইউজিসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বর্তমানে ১০৮টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আইনানুযায়ী প্রতিষ্ঠার ৭ বছরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হবে। সেজন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে এক একর ও অন্য এলাকায় দুই একর জমি থাকতে হবে। ২০১০ সালে সংশোধিত আইন হওয়ার পর সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তুবেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ পার হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে সাময়িক অনুমতিপত্র বাতিল বা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের বিধান থাকলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সময় বাড়িয়ে শুধুই আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। তবে এবার শুধু কাগুজে আলটিমেটাম নয়, বাস্তবেও প্রতিফলন ঘটবে।
সূত্র জানায়, অন্তত ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারবে না। ওই ১২ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হবে। আর ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস স্থায়ী ক্যাস্পাসে যেতে পারবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ ইউজিসিকে জানিয়েছে। তবে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরো সময় চেয়েছে। যদিও এবার স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে ইউজিসি।
সূত্র আরো জানায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বিষয়ে তাগাদা দেয়া হয়। আইন পাশ হওয়ার পর একই বছর রেড এলার্ট জারি করে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু ওই সময় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগই নেয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় ২০১২ সালে, তৃতীয় দফায় ২০১৩ সালে, চতুর্থ দফায় ২০১৫ সালের জুন এবং পঞ্চম দফায় ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে গরিমসি করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আইন না মানার প্রবণতা তৈরি হয়। ওই প্রেক্ষাপটে ২৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে ইউজিসির পরিচালক ওমর ফারুখ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম