অনলাইন ডেস্ক :
তাপপ্রবাহে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। অ্যারিজোনা রাজ্যে তীব্র গরম আবহাওয়ার রেকর্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিওএস) জানিয়েছে, ১১৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কোনো না কোনো তাপ সতর্কতার অধীনে আছেন। ফিনিক্সে গত ১৩ দিনে তাপমাত্রা কমপক্ষে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে তা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য অনেক শহরে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জারি করা একটি সতর্কবার্তায় এনডব্লিওএস জানায়, নেভাদা, ওকলাহোমা, টেক্সাস এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যগুলোতেও আঘাত হানবে তাপপ্রবাহ। এ ছাড়া দক্ষিণ সমভূমির কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। পূর্বাভাসকারীরা বলছেন, কিছুকিছু এলাকায় রাতের তাপমাত্রা ‘অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ’ (৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে) থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে রাতের বেলায় কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে জনগণ।
উদ্ভূত পরিস্থিতে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। দিনের আলোয় ঘরে থেকে নিজেদের হাইড্রেটেড থাকার পাশাপাশি পোষা প্রাণী বা বাচ্চাদের তালাবদ্ধ যানবাহনে না রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন তারা। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে তাপ-সম্পর্কিত কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭০০ জন মারা যায় বলে অনুমান করা হয়। লাস ভেগাস ও নেভাদার বাসিন্দারা রোববার ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখতে পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এল পাসো ও টেক্সাসেও চরম তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিনিক্সে গৃহহীন লোকদের জন্য শীতল আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। শহরটি তার তাপ ত্রাণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে হাজার হাজার পানির বোতলও সরবরাহ করছে।তাপপ্রবাহে ধুঁকছে ইউরোপও।
স্পেন, ফ্রান্স, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া এবং তুরস্কের কিছু অংশ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াদের ওপরে আঘাত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতালিতে প্রচন্ড গরমে পর্যটকসহ বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে; অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রাকৃতিকভাবে ঘটতে থাকা আবহাওয়া প্যাটার্ন যা এল নিনো নামে পরিচিত তার প্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটা প্রতি তিন থেকে সাত বছরে একবার ঘটে। শিল্প যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে পৃথিবী ইতোমধ্যেই প্রায় ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উষ্ণ হয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমানো না গেলে একসময় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে ওঠতে পারে আমাদের পৃথিবী। সূত্র: বিবিসি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২