April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 22nd, 2023, 7:50 pm

স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান নোবেল

অনলাইন ডেস্ক :

প্রতারণার মামলায় বিতর্কিত সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার নোবেলের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিন চেয়ে আবেদন করলে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিন আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। পুলিশকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। অর্থ নিয়ে অনুষ্ঠানে গান গাইতে না যাওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের দায় স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া মাদক সেবন ও স্ত্রীকে মারধরের বিষয়টি সামনে আনলে অভিযোগ মেনে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি।

জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে, নোবেলকে কারা মাদক সরবরাহ করতেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, বগুড়ার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন ব্যক্তির যোগসাজশে মাদকের লাইসেন্স নেন নোবেল, যা দিয়েই তিনি মাদক কিনে নিয়মিত গ্রহণ করতেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে নোবেল এমন তথ্য দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে নোবেল অকপটে সব অভিযোগ স্বীকারসহ নানা তথ্য দিয়েছেন বলে জানান ডিবি সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, আদালত থেকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর গায়ক নোবেলকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকা নিয়ে প্রগ্রামে না যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘নোবেল মাদক সেবন ও স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার বিষয়গুলো আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন।’ তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর তিনি কোনোটাই অস্বীকার করেনি। ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, অন্য অপরাধীদের সঙ্গে তার পার্থক্য হচ্ছে তিনি একজন শিল্পী মানুষ। এ কারণে তার মধ্যে সংশোধিত বা ভালো হওয়ার আকাক্সক্ষাটা আছে। তার মতো একজন গুণী মানুষ সংশোধিত হয়ে সমাজের জন্য দেশের জন্য যদি ভালো বিনোদনের ব্যবস্থা করেন সেটা অবশ্যই ভালো। নোবেলকে কারা মাদক সরবরাহ করত, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি গ্রেপ্তারের পরই আমাদের মাদক সাপ্লাইয়ের বিষয়ে বলেছেন।’

তিনি বলেন, ‘নোবেল যে মাদক গ্রহণ করতেন সেগুলো লাইসেন্স নিয়ে এ দেশে অন্য মানুষও গ্রহণ করে। আমার জানামতে বগুড়ার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন লোক তাকে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।’ এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, নোবেলের মতো কয়েকজন যুবককে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছে এভাবে অথচ তাদের কোনো রোগ নেই। শুধু টাকার বিনিময়ে নেশার জন্যই মাদক সেবনের লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নোবেল লাইসেন্স ব্যবহার করেই মাদক কিনে সেবন করতেন। এতে তার কয়েকজন সহযোগীও আছেন এবং বগুড়ার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা আছেন, যারা টাকা পেলেই লাইসেন্স বিক্রি করে দেন।

নোবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, তিনি টাকা নিয়ে প্রগ্রামে না যাওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া স্ত্রীকে মারধর করে বের করে দেওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন। এর আগে শনিবার সকালে নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অগ্রিম এক লাখ ৭২ হাজার নিয়ে অনুষ্ঠানে না গিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মতিঝিল থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। গত ১৬ মে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানে না গিয়েও এক লাখ ৭২ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন বাদী শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ‘এসএসসি ব্যাচ ২০১৬’-এর প্রতিনিধি মো. সাফায়েত ইসলাম।