অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পর এবং জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেয়ার পর প্রথমবারের মতো গতকাল রোববার হংকংয়ে লেজিসলেটিভ কাউন্সিল নির্বাচন হচ্ছে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন তারাই, যাদেরকে সরকার ‘দেশপ্রেমিক’ হিসেবে মনে করেছে। তবে এই নির্বাচনের কড়া সমালোচনা করেছেন অধিকারকর্মী, বিদেশি সরকারগুলো এবং মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। হংকংয়ের সরকারি কর্মকর্তারা জনগণকে ভোটদানে উৎসাহিত করেছেন। তারা বলেছেন, এই নির্বাচন হলো প্রতিনিধিত্বমূলক। তারা এ ক্ষেত্রে নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, গত বছর চাপিয়ে দেয়া নিরাপত্তা আইনের উল্লেখ করে বলছেন, ২০১৯ সালে এশিয়ার অর্থনীতির এই প্রাণকেন্দ্র প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠার পর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এসবের প্রয়োজন ছিল। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার হংকংবাসীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পক্ষান্তরে কিছু সমালোচক প্রতিবাদ হিসেবে এই নির্বাচনে ভোট না দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হংকংয়ে কাউকে ভোট না দিতে উৎসাহিত করা অথবা অবৈধ ভোট দেয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সকালে ভোট শুরু হলেও ভোটদানের পরিমাণ আগের নির্বাচনের চেয়ে অনেক কম। এর আগের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল শতকরা ৫৮ ভাগ। ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনা শাসনের অধীনে বৃটেন ফিরিয়ে দেয়ার পর ২০০০ সালে সেখানে ভোট পড়েছিল শতকরা ৪৩.৬ ভাগ। এটাই সর্বনিম্ন ভোটের হার। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটায় ভোটকেন্দ্র খুলে যায়। এ সময় যারা ভোট দিয়েছেন, তারা বলেছেন, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তারা নাগরিক দায়িত্ব পালন করেছেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিষয়ক শিক্ষক টাম পো-চু (৭৯) বলেন, তিনি আশা করেন নতুন নির্বাচিত কাউন্সিল জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল হবে। তারা যদি হংকংয়ের মানুষের কথা চিন্তা না করে, তাহলে এর কোনো সুব্যবহার হবে না। প্রথমেই যারা ভোট দিয়েছেন তার মধ্যে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম অন্যতম। তিনি ভোট দিয়েছেন মিড-লেভেল ডিস্ট্রিক্টে। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে ভোটের হার কি হবে সে বিষয়ে কোনো টার্গেট নির্ধারণ করেনি সরকার। চীনা নেতারা কোনো কিছু নির্ধারণ করেছেন কিনা সে বিষয়েও তিনি অবহিত নন। ভোটের হার কি হবে এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে হংকংয়ে অবস্থিত বেইজিংয়ের লিয়াজোঁ অফিস কোনো উত্তর দেয়নি। ওদিকে ক্যারি লাম ভোট দিয়ে বক্তব্য রাখার আগে লিগ অব সোশ্যাল ডেমোক্রেট নামের বিরোধী একটি গ্রুপের বেশ কিছু ব্যক্তি প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা পূর্ণাঙ্গভাবে সার্বজনীন ভোটের অধিকার দাবি করেন। তাদের হাতে দেখা যায়- ‘শক্তি প্রয়োগ করে স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে, বিবেক ব্যবহার করে ভোট দিন’- লেখা ব্যানার। নিরাপত্তা রক্ষায় পুরো শহরে মোতায়েন করা হয়েছে ১০ হাজার পুলিশ এবং ৪০ হাজার সরকারি নির্বাচনী কর্মী।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু