November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 1st, 2021, 8:32 pm

হঠাৎ কলকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি আত্মঘাতী: ফখরুল

ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্ক :

লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ রফতানিমুখী শিল্প কলকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘পুরোপুরি আত্মঘাতী’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (১লা আগষ্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা দেখেছেন কী ভয়াবহ অবস্থা? কী রকম তুঘলকি কারবার- আগে বলা হলো যে, করখানা খোলা হবে না, ৫ তারিখ পর্যন্তই বন্ধ থাকবে। আবার হঠাৎ করেই বলা হলো- কলকারখানা খোলা হবে। কী করে লোকগুলো আসবে তার কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার দেখা যাচ্ছে, রাত্রিবেলা বলছে, দুপুর ১২ টা পর্যন্ত গণপরিবহন খোলা থাকবে।’ ‘আমি কী এমনি বলেছিলাম যে, এগুলো আসছে হেমায়েতপুর থেকে। আসলেই তো! সব হেমায়েতপুরের অবস্থা। এটা বদ্ধ উন্মাদনা ছাড়া আমি কিছু দেখতে পাই না। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে যে, অযোগ্যতা, দুর্নীতি পরায়নতা এবং আন্তরিকতার চরম অভাবে এসব আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করছে। দিস ইজ টোটালি সুইসাইডাল’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেখে তো সন্ত্রস্ত হয়ে যেতে হয়। যেভাবে মানুষ আসছে একেবারে গাদাগাদি করে, ঘাড়ের ওপরে চড়ে আসছে। একবার তাদের ছুটি দিল সব চলে গেল। আবার ফিরছে তারা মফস্বল থেকে। এখন তো মফস্বলে সংক্রমণ বেড়েছে। ওইগুলো নিয়ে তারা আবার ফিরে আসছে। সো উই আন্ডারস্ট্যান্ড কী হতে যাচ্ছে ঢাকাতে। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে গত শনিবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকারেরে অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি অনেকবার বলেছে যে, দিন আনে দিন খায় মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিকসহ সকল শ্রেণির নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা ব্যতিত লকডাউন কখনই কার্য্কর হবে না। সেইজন্যই বিএনপি এসব মানুষদেরকে এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিল। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৃত দুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।’ ‘উপরন্তু হঠাৎ করে রপ্তানীমুখী কলকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা আরও মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশে তারা হতবিহ্বল হয়ে উঠেছে এবং চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকার বাইরে এই শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগণ ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হবার সম্ভাবনা বাড়ছে’- বলেন মির্জা ফখরুল। টিকা নিয়ে সরকার প্রতারণা করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। একদিকে সরকার বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লাখ টিকা দিতে পারেনি। টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে তারা (সরকার) যা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ব্যতিত কিছুই নয়।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের জন্য টিকা প্রাপ্তির উৎস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উক্তি এখন হাস্যকর। এগুলো যে ফাঁকা বুলি- এটা বুঝতে আর জনগণের বাকি নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ফাঁকা বুলি না আওরিয়ে অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহবান জানানো হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. রফিকুল ইসলাম, তাইফুল ইসলাম টিপু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব) অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও অধ্যাপক আবদুস সালাম।