নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
খালাস পেলেও একমাত্র বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছরেও জামিন মেলেনি। ফলে জেলের ঘানি টানতে হচেছ পাঁচ শতাধিক বিডিয়ার সদস্যকে। তাই হত্যা মামলার মতো বিস্ফোরক মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
রোববার (৫ মে) দুপুরে ঘন্টাব্যাপী রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে আযোজিত মানববন্ধন পরে সংবাদ সম্মেলন করেএ দাবি জানানো হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, আমাদের কারও স্বামী, কারও বাবা, কারও ভাই, কারও সন্তান বিডিআরে কর্মরত ছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায়তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দাযের হয়। যার একটি বিডিআর পরিচালিত আইনে, একটি ফৌজদারি আইনে হত্যা মামলা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা। বিডিআর মামলা এবং হত্যা মামলা থেকে খালাস পাওয়া সদস্য সংখ্যা প্রায় পাঁচশতাধিক। শুধুমাত্র বিস্ফোরক মামলাটির জন্য মুক্তি মিলছে না পাঁচ শতাধিক বন্দী বিডিআর সদস্যদের।
বক্তারা আরও বলেন, হত্যা মামলাটি দুই বছর ১০ মাসে ৫৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে রায় দেওয়া হয়। দুর্ভাগ্যবশত বিস্ফোরক মামলাটি দীর্ঘ ১৬ বছরে মাত্র ২৮৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হযেছে। বিস্ফোরক মামলায় জামিন প্রদানে আইনগত বাধা না থাকলেও খালাসপ্রাপ্তদের একজনকেওজামিন দেওয়া হয় নাই। এভাবে ধীর গতিতে মামলা চলতে থাকলে আসামিদের জীবন দশায় শেষ হবে কিনা সন্দেহ থেকে যায়।বক্তারা বলেন, আমরা প্রত্যেকেই নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি। আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বিডিআর সদস্যরা, যারা ইতিমধ্যে চাকরি হারিয়ে জেলখানায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এমতাবস্তায় একদিকে পরিবারের ব্যায়ভার এবং মামলা পরিচালনায় আইনজীবীর ব্যায়ভার বহন করতে আমরা প্রতিনিয়তহিমশিম খাচিছ। অপরদিকে বছরের পর বছর তাদের মামলার ঘানি টানতে গিযে পরিবারগুলো আজ নিস্ব। বিভিন্ন জেলার দূরদূরাস্ত থেকে ঢাকায় এসে মামলা পরিচালনা করা এবং বন্দী বিডিআর স্বজনদের খোঁজখবর রাখা দূরহহযে পড়েছে। অভিযুক্তদের অনেকেই বয়স্ক হওয়ায় জেলের মধ্যে থেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচেছন। অনেকেইমানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন-এটা ভেবে যে তারা আর কোনোদিন হয়তো বাইরের আলো বাতাস দেখতে পাবেন না।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে ৫২ জন বিডিয়ার সদস্য বন্দী অবস্খায় মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেক বিডিআর সদস্য মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আজ আমাদের বাবা থাকা সত্ত্বেও সন্তানরা এতিম, স্বামী থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী বিধবা, ভাই থাকা
সত্ত্বেও আমরা ভাই হারা, ছেলে থাকা সত্ত্বেও বাবা-মা সন্তানহারা। আমরাও চাই প্রকৃত ন্যায় বিচারের স্বার্থে দোষীদের বিচার হোক এবং যারা নির্দোষ তারাও অবিলম্বে মুক্তি পাক। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে এবং নিরাপরাধ বন্দীরা স্বাভাবিক জীবনেফিরে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ভূমিকা পালন করবে।এ অবস্থ’ায় মামলাটি দ্রুতনিষ্পত্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্থক্ষেপ কামনা করেন তারা।
মানববন্ধনে রংপুর বিভাগের বিডিআর সদস্যের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। পরে একই দাবিতে প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
এসময় বক্তব্য দেন, শামীম রেজা, রফিক উদ্দিন, সুজন মিয়া, বিকাশ রায়, রাবেয়া আক্তার, শরিফা খাতুন ও মনছুরা মনিসহ অন্য সদস্যরা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি