অনলাইন ডেস্ক :
চলচ্চিত্র বা টিভি সিরিজে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নতুন কিছু নয়। তবে হালে ওটিটি কনটেন্টে খোলামেলা দৃশ্য তুলে ধরা হচ্ছে আরো বিস্তারিতভাবে। ওটিটির পরিচালক-প্রযোজকরা বলছেন সেন্সরের কাঁচির ভয় না থাকায় তারা আগের চেয়ে বাস্তবসম্মতভাবে এসব দৃশ্যে তুলে ধরছেন। কিন্তু মুশকিল হলো, পাত্রপাত্রীদের অনেকেই এসব দৃশ্যে অভিনয়ে পুরোপুরি স্বচ্ছন্দ নন। ফলে দৃশ্যগুলোতে তাদের সাবলীলতা বাধাগ্রস্ত হয়। এসব ঝামেলা এড়াতে হালে বড় বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলো ‘ইনটিমেসি’ পরিচালক নিয়োগ দিচ্ছে। মূল পরিচালকের বাইরে তারা কেবল ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলো তদারকির করবেন! এই যেমন কালকের টাটকা খবর, প্রখ্যাত বলিউড পরিচালক সঞ্জয়লীলা বানশালির ‘হীরামান্ডি’ সিরিজের জন্য ইনটিমেসি পরিচালক নিয়োগ দিচ্ছে নেটফ্লিক্স। এই সিরিজের সঙ্গে যুক্ত একধিক সূত্র সংবাদমাধ্যমকে খবরটি নিশ্চিত করেছে। একটি সূত্র জানায়, গল্পের প্রয়োজনেই সিরিজটিতে খোলামেলা দৃশ্য দেখা যাবে। বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে যেসব দৃশ্য আরো বিশ্বাসযোগ্য করতেই এই নিয়োগ। আলোচিত এই সিরিজে অভিনয় করবেন মনীষা কৈরালা, সোনাক্ষী সিনহা, অদিতি রাও হায়দারি। তবে নেটফ্লিক্স ইনটিমেসি পরিচালক হিসেবে কাকে নিয়োগ দিয়েছে জানা যায়নি। বেশ কয়েকটি ভারতীয় প্রজেক্টে ইনটিমেসি পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন নেহা বিয়াস। ছবি বা সিরিজে তাঁর মতো পরিচালকের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নেহা বলেন, ‘যৌন দৃশ্যে পারফর্ম করা ভীষণ কঠিন। গেলাম আর পারফর্ম করলাম ব্যাপারটা এমন নয়। আমরা আগে পাত্রপাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাদের জড়তা দূর করি। এরপর দৃশ্যটি কীভাবে দৃশ্যায়ন হবে, অভিব্যক্তি কেমন হবে সেসব নিয়ে অনুশীলন করি। ’ ৩৫ বছর বয়সী নেহা বলেন তিনি তাঁর পেশা নিয়ে ভীষণ গর্বিত, এটা তাঁর কাছে আর দশটা কাজের মতোই একটা। ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তির অপেক্ষায় থাকা শকুন বাত্রার ‘গেহরাইয়া’তে বেশ কয়েটি খোলামেলা দৃশ্যে পারফর্ম করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। কয়েকদিন আগে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এ ধরণের দৃশ্যে অভিনয় করা খুবই কঠিন। আপনার মন থেকে আবেদন তৈরি না হলে পুরো দৃশ্যটি মাঠে মারা যাবে। ’ শকুন তাঁর ছবির জন্যও ‘ইনটিমেসি’ পরিচালক রেখেছিলেন। নাগেশ কুকুনুরের ওয়েব সিরিজ ‘সিটি অব ড্রিমস’-এ চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন আইয়াজ খান। যে দৃশ্য নিয়ে বারবার ভুগতে হয়েছে তাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরিচালক আমার ওপর ভীষণ বিরক্ত হয়েছিলেন কারণ আমি ঠিকভাবে পারফর্ম করতে পারছিলাম না। একজন কোচের অধীনে অনুশীলন করলে এ সমস্যা হতো না। ’ কেবল ভারতে নয় সারা দুনিয়াতে অনেক প্রযোজনা সংস্থাই ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য আলাদা পরিচালক ভাড়া করেন। এইচবিওর আলোচিত সিরিজ ‘গেম অব থ্রোন্স’-এর ক্ষেত্রেও ছিলো। তবে ২০১৭ সালে প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর থেকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে আলাদা পরিচালক রাখাটা প্রায় রীতিতে পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ সময় এ ধরণের পরিচালক হন নারী। এমন একজন ইটা ও’ব্রায়েন। তাঁর মতো কোচের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ও’ব্রায়েন বলেন, ‘যৌন দৃশ্যে অভিনেতা-অভিনেত্রীর স্পর্শকাতর অঙ্গ উন্মুক্ত থাকে। এ সময় ভীষণ সতর্কতা দরকার। একজন ইনটেমিসি সমন্বায়ক বা কোচ পুরো দৃশ্যটি আগে থেকেই কোরিওগ্রাফ করে রাখে। সে অনুযায়ী পাত্র-পাত্রীদের তৈরি করে। ’ ও’ব্রায়েন ২০২০ সালে বিবিসির ব্যাপক প্রশংসিত সিরিজ ‘নরমাল পিপল’-এ কাজ করেছেন। তিনি জানান মিনি সিরিজটির প্রথম যৌন দৃশ্যের শুটিং করতে পুরো এক দিন লেগেছিল। ও’ব্রায়েন এ ছাড়া কাজ করেছেন নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ ‘সেক্স এডুকেশন’-এও।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, বলিউড হাঙ্গামা, আউটলুক ইন্ডিয়া, এবিসি রেডিও
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ