নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষা ১ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে শুরু হচ্ছে। তবে খুলছে না আবাসিক হল। হল না খুলে পরীক্ষা নেয়ায় ঢাকায় এসে থাকার জায়গা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর এই সাত সরকারি কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজে আবাসিক হল রয়েছে। সব মিলিয়ে এই কলেজগুলোর প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী হলে থাকেন। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার ফলে এখন এত কম সময়ে ঢাকায় এসে বাসা খোঁজা মুশকিল। এরপর আবার অনেকের রয়েছে আর্থিক সংকট। হঠাৎ করে ঢাকায় এসে মেসে উঠার সামর্থ্য নেই অনেক শিক্ষার্থীর। সব থেকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকা ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই দুই কলেজে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গা নিশ্চিত না করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হয়নি। অন্তত যে সব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা রয়েছে শুধু তাদের জন্য হল খুলে দেয়ার দাবি তাদের। ঢাকা কলেজের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা শুরুর মাত্র ১০ দিন আগে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সশরীরে পরীক্ষা হবে। এখন আমরা ঢাকায় এসে থাকার যায়গা খুঁজব নাকি পড়ালেখা করব। এটি একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। অন্তত যাদের পরীক্ষা আছে তাদের জন্য হল খুলে দেয়া হলে মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয় না। আমাদের দাবি পরীক্ষা শুরুর আগেই যেন শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেয়া হয়। ইডেন মহিলা কলেজের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কথা চিন্তা না করেই সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। আমরা ঢাকায় এসে কোথায় থাকব? মেয়ে মানুষ তো আর যেখানে সেখানে থাকতে পারি না। হুট করে কোনো আত্মীয়ের বাসায়ও উঠা যায় না। আর সবার তো আর ঢাকাতে আত্মীয় নেই। মেসে উঠতে গেলেও অনেক টাকার প্রয়োজন। অনেকের আর্থিক অবস্থা খারাপ। আমাদের যাদের পরীক্ষা রয়েছে তাদের জন্য হল খুলে দিলে এত মানসিক টেনশনে থাকতে হয় না। আমরা হল খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, হল খোলা সম্ভব না। আর ওইভাবে ফিক্সড করে শিক্ষার্থীদের হলে তোলা যাবে না। কারণ একটা রুমে একাধিক শিক্ষার্থী থাকে। এমন যদি হত সিঙ্গেল রুম যাদের পরীক্ষা তারা তাদের রুমে থাকবে। পরীক্ষা শেষ হলে চলে যাবে। আমাদের তো আর এক রুমে একজন থাকে না। এই কোভিডে এটা একদমই এলাউ করা যাবে না। অন্তত যতক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়া শেষ না হচ্ছে। সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, হল খোলার সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় পরামর্শক কমিটি গ্রহণ করতে পারে। তারা যখন আমাদের হল খোলার বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন তখনই আমরা হল খুলতে পারব। এটি আমাদের সাত কলেজ প্রশাসন অথবা অধ্যক্ষরা কোনোভাবেই গ্রহণ করতে পারি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাপারগুলো দেখছেন। তার নির্দেশনা ছাড়া হল খোলার এখতিয়ার আমাদের নেই।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম