November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 13th, 2022, 9:45 pm

হাইওয়ে পুলিশের শক্তি ও সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হাইওয়ে পুলিশের শক্তি ও সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্যে ৪ গুণ করা হচ্ছে পুলিশের বিশেষায়িবেত ওই ইউনিটের জনবল। কেনা হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ যানবাহন এবং বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি। আর কার্যক্রম বাড়াতে যুক্ত করা হচ্ছে হাইওয়ে পুলিশের বিদ্যমান ৫টি অঞ্চলের সঙ্গে নতুন করে আরও ৩টি হাইওয়ে অঞ্চল বা রিজিয়ন। তাছাড়া ওই বাহিনীর জন্য নতুন ৭২টি থানা স্থাপনের প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছে। মাদারীপুরের শিবচরে একটি অত্যাধুনিক ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের মাধ্যমে সারা দেশের ১ হাজার ১৪ কিলোমিটার মহাসড়ককে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বিগত ২০০৫ সালে হাইওয়ে পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। তখন ২৪টি হাইওয়ে থানাসহ ৪৮টি ফাঁড়ি ছিল। আর ৩ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক এবং ৪ হাজার ২৪৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক ছিল হাইওয়ে পুলিশের অধিক্ষেত্র। বর্তমানে ৫টি রিজিয়ন, ১০টি সার্কেল এবং ৭৩টি থানা ফাঁড়ির মাধ্যমে পুলিশের ওই বিশেষায়িত ইউনিটের বিশদ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে ২ হাজার ৮৭৪ জন জনবলের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু জনবল আরো ৩ গুণ বাড়িয়ে বর্তমানের তুলনায় প্রায় ৪গুণ করা হচ্ছে। অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরো ৮ হাজার ১১২টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব। হাইওয়ে পুলিশের জনবল কাঠামোতে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত আইজিপি, ৫ জন ডিআইজি, ৯ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ৯ জন এসপি, ৫ জন অতিরিক্ত এসপি, ১২ জন এএসপি এবং অন্যান্য পদমর্যাদার ২ হাজার ৮৭৪ জন সদস্য আছে। তবে জনবল বাড়ানোর যে প্রস্তাব বিবেচনাধীন তাতে যুক্ত করা হয়েছে একজন করে ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি, ৮ জন এসপি, ২৭ জন অতিরিক্ত এসপি, ৬ জন এএসপি এবং ৮ হাজার ৭৯ জন অন্য পদমর্যাদার সদস্য রয়েছে। আর প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো অনুমোদন হলে হাইওয়ে পুলিশের মোট জনবল হবে ১০ হাজার ৯৯৬টি।
সূত্র জানায়, হাইওয়ে পুলিশ নতুন ১ হাজার ৩০০ যানবাহন কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছে। তাছাড়া এই বাহিনীর জন্য বিপুলসংখ্যক সরঞ্জামাদি কেনার প্রস্তাবও বিবেচনাধীন। বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২২টি জেলায় হাইওয়ে পুলিশের কোনো স্থাপনা নেই। তবে নতুন ৩টি রিজিয়নের মাধ্যমে ওসব জেলায় হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহ রিজিয়ন অনুমোদন হয়েছে। তাছাড়া নতুন ৭২টি থানার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি থানা ভবন হবে ৬ তলা ভিতবিশিষ্ট চতুর্থ তলা ভবন। ওই সংক্রান্ত প্রস্তাবটি এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন। তাছাড়া হাইওয়ে পুলিশের জন্য মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পারে ৫ একর জমির ওপর একটি অত্যাধুনিক ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ট্রেনিং সেন্টারের জন্য ১৩৫ জনের জনবল কাঠামোও নির্ধারণ করা হয়েছে। তার নেতৃত্বে থাকবেন একজন ডিআইজি (কমান্ড্যান্ট)। তাছাড়া একজন অতিরিক্ত ডিআইজি (অতিরিক্ত কমান্ড্যান্ট), ২ জন এসপি, ৪ জন অতিরিক্ত এসপি, ৪ জন অতিরিক্ত এএসপি ও ১২৩ জন অন্যান্য পদমর্যাদার পুলিশ ও নন পুলিশ সদস্য।
সূত্র আরো জানায়, দেশের মহাসড়কগুলোকে ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় আনার অংশ হিসাবে ১ হাজার ১৪ কিলোমিটার মহাসড়কে সিসি টিভি বসানো হচ্ছে। সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ ৫টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রকল্পের আওতায় আছে পোস্তগোলা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত ২২৩ কিলোমিটার, ঢাকা থেকে সিলেট ২৩৯ কিলোমিটার, আমিনবাজার থেকে হাটিকুমরুল ১৬০ কিলোমিটার, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ ১৭২ কিলোমিটার এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২২০ কিলোমিটার মহাসড়ক। তাছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৫০ কিলোমিটার রাস্তায় সিসিটিভি স্থাপনের কাজ চলমান।
এদিকে এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মল্লিক ফখরুল ইসলাম জানান, রূপকল্প ২০৪১ এবং সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল সামনে রেখে সরকার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তার অংশ হিসাবে এশিয়ান হাইওয়ে, সার্ক হাইওয়ে, এসএএসইসি হাইওয়ে, বিমসটেক করিডর এবং বিবিআইএন হাইওয়ের কার্যক্রম চলমান। তাছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর, নির্মাণাধীন মহেশখালী মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, সরকারি-বেসরকারি ১০০ ইকোনমিক জোন, নৌবন্দরগুলোর সংযোগ সড়ক, ২৪টি স্থলবন্দরের সংযোগ সড়ক এবং অনেক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠায় মহাসড়কগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মহাসড়কে যানবাহনের ক্রমাগত চাপ মোকাবেলা, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।