November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 26th, 2023, 3:34 pm

হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি, ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া কালনীছড়া খননের দাবি

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের কালনীজালাই হাওরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বর্তমানে ভরাট হয়ে যাওয়া প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ কটাই দেওয়ানের নালা ও কালনীছড়া পুনঃখননের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। খালটি খনন হলে প্রায় হাজার একর অনাবাদি জমিতে ধান ও রবিশস্য উৎপাদন হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক ময়না মিয়া, ফজলু মিয়া, ইলিয়াছুর রহমান, রশিদ আলী, আবুল কালাম গেদু, চেরাগ আলী, এম. রাজু আহমেদ, দলা মিয়া, লাল মিয়া, মাতাব উদ্দিন, আবুল কালাম, ইস্রাব আলী, কাজী ময়নুল ইসলাম, আব্দুস ছালাম, মকদ্দছ আলী মখন প্রমুখ বলেন, কাপনাপাহাড় চা বাগানের নিকট চম্পকলতা গ্রামের সীমান্ত টিলা থেকে কালনীছড়ার উৎপত্তি। অপরদিকে মোহাম্মদনগরের টিলা এলাকা থেকে কটাই দেওয়ানের নালা শুরু হয়। দুই দিক থেকে নেমে আসা ছড়া দু’টি কালনীজালাই হাওরের মধ্যবর্তী কাড়ারঘাট নামক স্থানে গিয়ে এক জায়গায় মিলিত হয়। সেখান থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে হযরত শাহ খাকী (রঃ) মাজার ঘাটে পাবিজুড়ী খালের সাথে সংযুক্ত হয়ে হাকালুকি হাওরে ধাবিত হয়েছে।

এ খালের পানিতে মোহাম্মদনগর, চম্পকলতা, চাটেরা ও শাহাপুর মৌজার হাজার একর জমিতে ধান ও রবিশস্য চাষ হতো। সেই সাথে চম্পকলতা, কালীনগর, ভোগতেরা, চাটেরা, জায়ফরনগর ইত্যাদি এলাকার লোকজন মাছ ধরতেন। এক সময় এ খালে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমানে সেই খাল আগের মত আর নেই। সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রচন্ড বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢলে পাহাড় থেকে নেমে আসা পলিমাটি ও নুরি পাথরে কৃষিনির্ভর খালের বেশ কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। বাকীটুকু পার্শ্ববর্তী জমির মালিকগণ ভরাট করে দখলে নিয়েছেন। যে কারণে একদিকে এক সময়ের ৩০/৪০ ফুট প্রস্থের বড় খালটি এখন ছোট নালায় পরিণত হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে। এখন খালে মাছ থাকাতো দুরের কথা, পানিও থাকেনা। অপরদিকে এ হাওরের প্রায় হাজার একর জমি ১৪/১৫ বছর থেকে অনাবাদি পড়ে আছে। ধান চাষের বদলে এ হাওরে এখন শুধু গোবাদি পশু চরানো হয়। অনেক সময় গরু গুলোও খালে খাবার পানি পায় না। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এ জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় অনেক বাড়ী জলমগ্ন থাকে। বোরো ও আমন ধান, রবিশস্য এবং দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদনে এ খালের বিকল্প নেই। শত শত কৃষক পরিবারে শান্তি ও স্বচ্ছলতা ফেরাতে এ খালটি পুনঃখনন একান্ত অপরিহার্য।

স্থানীয় কৃষক ইলিয়াছুর রহমান বলেন, খালটি খননের জন্য অনেক দিন যাবত বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিচ্ছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক ইঞ্চি জমিও খালি থাকবে না। কিন্তু আমাদের হাজার একর জমি খালি পড়ে আছে প্রায় ১৫ বছর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে খালটি খননের ব্যবস্থা করব।