নিজস্ব প্রতিবেদক :
হাতিরঝিল-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়কটি এবার চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করবে সরকার। এজন্য ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)’-এর ভিত্তিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। রোববার (৯ জানুয়ারী) সকালে রাজধানীর হোটেল কন্টিনেন্টাল প্রকল্পের আওতায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়। চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) ও চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসি) সঙ্গে এ চুক্তি হয়। হাতিরঝিল থেকে ডেমরা পর্যন্ত রুটটি ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটারের। তবে এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে তা ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। এ রুটে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে বর্তমানে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ১০ মিনিটেই হাতিরঝিল থেকে ডেমরা যাওয়া যাবে। একইভাবে ১০ মিনিটে ডেমরা থেকে হাতিরঝিলে আসতে পারবেন যাত্রীরা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এক্সপ্রেসওয়েটি ব্যবহারের জন্য ২১ বছর পর্যন্ত টোল দিতে হবে। তবে যানবাহনপ্রতি ঠিক কী পরিমাণ টোল দিতে হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। প্রকল্পের আওতায় দুটি ব্রিজ, চারটি ইন্টারসেকশন, দুটি কালভার্ট, একটি ওভারপাস, ফুটওভার ব্রিজ ও টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের মেয়াদকাল চার বছর। পরিকল্পিত উড়ালসড়কটি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ঢাকার কেন্দ্রে আসার বিকল্প প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি এটি যানজট কমাতেও ভূমিকা রাখবে। পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতানা আফরোজ বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগকে আমরা উৎসাহিত করে সরকারের সড়কখাতে গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রকল্পের চুক্তি সই হলো। দেশের উন্নয়ন ও অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমরা জানি সরকারের বাজেটে নানা ধরনের প্রকল্প হচ্ছে। পাশাপাশি পিপিপি মডেলেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সওজ এই মুহূর্তে ছয়টি পিপিপি প্রকল্পের কাজ করছে। এরমধ্যে ঢাকা বাইপাস সড়ককে ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার প্রকল্পের মাঠপর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। বাকি প্রকল্পগুলো প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে আছে। তার মধ্যে এটা অন্যতম প্রকল্প। পিপিপি প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিইও বলেন, পিপিপি প্রকল্পে ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা কাজ করি। অনেক দিন পড়ে থাকলেও আজকে চুক্তি সই করলাম। এ প্রকল্পে চায়না কমিউনিকশনস কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের কনসোর্টিয়াম দুই হাজার ৯৪ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার এক হাজার ২০৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট; এ দুটি জাতীয় মহাসড়ক ঢাকার সঙ্গে দেশের প্রধান দুটি শহরকে যুক্ত করেছে। তবে ব্যস্ততম দুটি মহাসড়কের প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়। জানা গেছে, মহাসড়ক ধরে যানবাহন ঢাকায় ঢোকার পর তা সড়কে ব্যাপক চাপ তৈরি করে। এতে প্রায়ই শহরের দক্ষিণ অংশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। তাই ঢাকার যানজট কমাতে ও শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বিকল্প প্রবেশদ্বারের জন্য বিদ্যমান হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা রুটটিকে এক্সপ্রেসওয়েতে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিমরাইল এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যেখানে মহাসড়কে যান চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখতে একটি বহুস্তর বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রওশন আরা মান্নান এমপি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর প্রমুখ।
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র