September 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 24th, 2023, 8:00 pm

হারমানপ্রিতের আচরণ ‘প্যাথেটিক’: বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার

অনলাইন ডেস্ক :

আম্পায়ারিংকে ‘প্যাথেটিক’ বলে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন হারমানপ্রিত কৌর। কিন্তু ভারতীয় অধিনায়কের এসব কথা ও ওই ম্যাচে তার আচরণই ‘প্যাথেটিক’ ছিল বলে মনে করেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অলরাউন্ডার মদন লাল। হারমানপ্রিতের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তার পূর্বসূরি ও সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক আঞ্জুম চোপড়াও। আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজে তিন ম্যাচের শেষ ওয়ানডেতে শনিবার এসব কা- ঘটান হারমানপ্রিত। আম্পায়ারিং নিয়ে তার বিতর্কিত মন্তব্য ও আগ্রাসী আচরণ অবাক করে দেয় অনেককেই। মাঠের ক্রিকেট ছাপিয়ে তা জন্ম দেয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনার। বাংলাদেশে তো হারমানপ্রিতকে নিয়ে ঝড় চলছেই। এবার তার দিকে আঙুল তুললেন ভারতের হয়ে ৩৯ টেস্ট ও ৬৭ ওয়ানডে খেলা ক্রিকেটার মদন লাল।

১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে দুর্দান্ত বোলিং করা সাবেক এই অলরাউন্ডার টুইটারে বললেন, ভারতীয় বোর্ডের উচিত হারমপ্রিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। “বাংলাদেশ নারী দলের বিপক্ষে হারমানপ্রিতের আচরণ ছিল ‘প্যাথেটিক।’ সে তো খেলাটির চেয়ে বড় কেউ নয়। ভারতীয় ক্রিকেটের দুর্নাম বয়ে এনেছে সে। বিসিসিআইয়ের উচিত তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাজনিত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।” হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের নারী দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার আঞ্জুম চোপড়া বলেন, সাময়িক উত্তাপ কমে গেলে নিজের ভুল বুঝতে পারবেন হারমানপ্রিত।

“যখন আগ্রাসনের আবহ শেষ হয়ে যাবে এবং সে ঠান্ডা হবে, আমি নিশ্চিত, সে পেছন ফিরে তাকিয়ে অনুভব করবে যে, ভিন্নমত প্রকাশে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল তার। অসন্তুষ্টি ফুটিয়ে তুলতে কোনো সমস্যা নেই। তবে মূল ব্যাপার হলো, এটা কখন ও কীভাবে করা যায়। ভাষায় প্রকাশের ক্ষেত্রেও আরও সাবধানী হওয়া উচিত ছিল তার।” আম্পায়ারিং নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা অন্যভাবে সামলানো যেত বলে মনে করেন ভারতের হয়ে ১৫৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ব্যাটার আঞ্জুম। “কোনো স্নিকোমিটার বা বল-ট্র্যাকিং ছিল না, কাজেই বিচার করা কঠিন।

তবে তারা (ভারতীয় দল) যদি মনে করে যে সিদ্ধান্ত তাদের বিপক্ষে গেছে, তাহলে আরও ভালোভাবে তা সামলানো যেত না? ভারতীয় অধিনায়ককে কেন ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে গিয়ে এভাবে অসন্তুষ্টি জানাতে হবে!” “এই ব্যাপারটি আরও ভালোভাবে সামলানো যেত। পরিস্থিতি এতটা খারাপ পর্যায়ে গেল কিভাবে? ভারতীয় দল প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি, এটা তাদের হতাশার কারণ হতে পারে। কিন্তু সেসব ব্যাপার ড্রেসিং রুমের ভেতরেই রাখা উচিত ছিল। এভাবে প্রকাশ্যে এসব করাৃ (ঠিক হয়নি)। এই ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়ে দেয় ভারতকে। নারী ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় ছিল সেটি। পরের ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত।

শেষ ম্যাচটি দারুণ নাটকীয়তার পর ‘টাই’ হয়। এই ‘টাই’ ম্যাচেই আউট হওয়ার পর হারমানপ্রিত এক হাত দিয়ে থাবা মারেন আরেক হাতে ধরে রাখা ব্যাটে। আম্পায়ারের দিকে তাকান আগুনে দৃষ্টিতে। এরপর ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে এতটাই জোরে মারেন যে, একটি স্টাম্প উড়ে গিয়ে পড়ে অনেকটা দূরে। ক্রিজ ছেড়ে যাওয়ার সময় আম্পায়ারের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে থাকেন টানা। এরপর ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে গ্যালারির দর্শকদের উদ্দেশে দেখান ‘থামস আপ।’ যদিও টিভি রিপ্লে দেখে তার আউটকে বৈধ বলেই মনে হয় বারবার।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে ম্যাচ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও হারমানপ্রিত দুই দফায় নিজ থেকেই টেনে আনেন আম্পায়ারিংকে। এতটা কঠোর ভাষায় তিনি আম্পারিংয়ের সমালোচনা করেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা বিরল। শেষ নয় সেখানেই। পুরস্কার বিতরণী শেষে ট্রফি নিয়ে উল্লাস করতে থাকা বাংলাদেশ দলের দিকেও কটূ কথা ছুড়ে দেন ভারতীয় অধিনায়ক। এই ট্রফি বাংলাদেশ জেতেনি, আম্পায়াররা জিতিয়েছে, ফটোসেশনে আম্পায়ারদেরও রাখা উচিত, এসব কথা বলতে থাকেন মেয়েদের ক্রিকেটের বড় এই তারকা। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা তখন দল নিয়ে চলে যান সেখান থেকে।