September 30, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 30th, 2024, 8:33 pm

হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, টেনেসি ও ভার্জিনিয়ায় হারিকেন হেলেনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হারিকেনের প্রভাবে টানা ভারি বৃষ্টিতে ফ্লোরিডা থেকে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত সবগুলো রাজ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় বহু রাস্তা ও সেতু ধ্বংস হয়েছে। ওই অঞ্চলগুলোর লাখ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের ওই অঙ্গরাজ্যগুলো ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয় ও অঙ্গরাজ্যগুলোর কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, জানিয়েছে রয়টার্স।

ওই অঞ্চলজুড়ে মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলো অকেজো হয়ে থাকায় শত শত মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। তাদের অনেকেই নিখোঁজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। হারিকেনে যোগাযোগ, গুরুত্বপূণ মহাসড়কগুলো ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্স্যুরেন্স ও পূর্বাভাসদানকারীরা জানিয়েছেন, সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য দেড় হাজার কোটি ডলার থেকে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি হতে পারে। নর্থ ক্যারোলাইনার প্রায় সব মৃত্যুর ঘটনাই বানকাম কাউন্টিতে ঘটেছে।

এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে শেরিফ কুয়েন্টিন মিলার জানিয়েছেন, এই কাউন্টিটিতে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কাউন্টি ব্যবস্থাপক আভরিল পিন্ডার জানান, তিনি অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি খাদ্য ও পানযোগ্য পানি চেয়েছেন। কাউন্টিটির অ্যাশভিল শহরের রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে ছিল। নর্থ ক্যারোলইনার গভর্নর রয় কুপার সিএনএনকে বলেছেন, “এটি একটি ধ্বংসাত্মক বিপর্যয়। আমি নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, তারা এমনকিছু এর আগে কখনো দেখেননি।”

কুপার জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও ১৯ অঙ্গরাজ্যের তল্লাশি ও উদ্ধারকারী দল সেখানে গিয়েছেন। কিছু রাস্তা মেরামত করতে কয়েক মাস লেগে যাবে। নর্থ ক্যারোলাইনার ফ্লাট রকের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। পেট্রল পাম্পগুলোতে গ্যাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা চিপ ফ্রাঙ্ক বলেন, “মুদি দোকানগুলো বন্ধ, মোবাইল ফোনের সার্ভিস বন্ধ হয়ে আছে। এগুলোর সবই গ্যাস স্টেশনগুলো ওপর নির্ভরশীল।

আপনি কোথাও যেতে পারবেন না, এটি ভীতিকর একটা অনুভূতি।” যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২৭ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিল। শুক্রবার নজিরবিহীনভাবে ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের শত শত কিলোমিটার ভেতরে প্রবল বাতাসের তোড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। তারপর থেকেই বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সাউথ ক্যারোলাইনা ২৫ মৃত্যুর কথা জানিয়েছে, জর্জিয়া ১৭ ফ্লোরিডা জানিয়েছে ১১ মৃত্যুর কথা।

সিএনএন অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে মোট ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করেছেন। জরুরি পরিষেবার কোনো বিঘœ না ঘটিয়ে এ সফরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে হারিকেন হেলেন ফ্লোরিডার গাল্ফ কোস্ট দিয়ে স্থলে উঠে আসে। তারপর থেকে এর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চজুড়ে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে আর তাতে কয়েক দশক ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ঘরবাড়িরও ধ্বংস হয়েছে।