May 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, August 18th, 2023, 7:41 pm

‘হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে’ মার্কিন পদক্ষেপ দ. এশিয়ার জন্য ইতিবাচক নয়: ওয়াশিংটনকে দিল্লি

প্রতীকী ছবি

শেখ হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে তা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের এবং দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিয়েছে ভারত।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অজ্ঞাত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত খুশি নয় এবং এই বার্তা ওয়াশিংটনকেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের মতো ভারতও ঢাকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।

আর তিন সপ্তাহ পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

তার আগে ভারতের এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে বলে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাউথ ব্লক (ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান) মনে করে, জামায়াতে ইসলামীকে ‘রাজনৈতিক ছাড়’ দেওয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে। উদার পরিবেশ যেটুকু রয়েছে, তা-ও আর থাকবে না।

নয়াদিল্লি মনে করে বাংলাদেশে হাসিনার সরকার দুর্বল হলে তা ভারত বা আমেরিকার জন্য ভালো হবে না।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, নয়াদিল্লি একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ তথ্য জানিয়েছে।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তালেবান এখন আফগানিস্তানের ক্ষমতার শীর্ষে।

মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের কথা বিবেচনা না করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চুক্তি করেছিল এবং এখন যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে কাবুলের পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী সম্পর্কে আমেরিকার নীতিও নয়াদিল্লির জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘতম স্থল সীমান্ত রয়েছে। ফলে সে দেশের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতেও প্রভাব ফেলে।

সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে, জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হলে ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে এবং বাংলাদেশে চীনের প্রভাব অনেক বেড়ে যাবে; যা ওয়াশিংটনের কাম্য নয়।

মনে করা হচ্ছে, আমেরিকা জামায়াতকে বরাবর একটি রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামায়াতকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তুলনা করে আমেরিকা। কিন্তু বাস্তবে, জামায়াত যে উগ্র মৌলবাদী সংগঠন এবং পাকিস্তানের হাতে তামাক খায়, এ বিষয়ে নয়াদিল্লি নিঃসন্দেহ।

বাইডেন প্রশাসন শুধু বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। ওই সূত্রের উল্লেখ করে আনন্দবাজার জানায়, নয়াদিল্লি এটাকে মোটেও ন্যায়সঙ্গত মনে করে না।

নতুন এই ভিসা নীতির ফলে যারা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করবে, তারা আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার পাবে না।

কূটনৈতিক শিবির মনে করে, আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে সে দেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি গ্রহণ প্রণয়ন করেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফর করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

সেখানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক বলেও বার্তা দিয়েছেন তারা।

প্রতিনিধিদলের নেতা কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একটি ইতিবাচক বৈঠক করেছেন।

ওই বৈঠকের পরপরই তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে বলেছি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা উভয় রাষ্ট্রের জন্যই জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’

—-ইউএনবি