অনলাইন ডেস্ক :
আগের দুই ম্যাচের তুলনায় এবার পাকিস্তানের ব্যাটিং হলো ভালো। পুঁজিও হলো বড়। পরে বোলাররা মেলে ধরলেন নিজেদের। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আফগানিস্তানকে অনায়াসে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার শঙ্কা এড়াল পাকিস্তান। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় ৬৬ রানে। প্রথম দুই ম্যাচে ৯২ ও ১৩০ রানের পর এবার ১৮২ রান করে পাকিস্তান। যেখানে বড় অবদান সাইম আইয়ুবের। এই ওপেনার ৪০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৪৯ রান। আগের দুই ম্যাচে ৭ ও ৬ উইকেটে জেতা আফগানিস্তান এবার আশাই জাগাতে পারেনি। আট বল বাকি থাকতে তারা গুটিয়ে যায় ১১৬ রানে। এই সিরিজের পাকিস্তান অধিনায়ক শাদাব খান ব্যাটিংয়ে ১৭ বলে ২৮ রানের পর হাত ঘুরিয়ে ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। পেসার ইহসানউল্লাহর প্রাপ্তিও ৩ উইকেট। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই মোহাম্মদ হারিসকে হারায় পাকিস্তান। তিন নম্বরে নেমে দুই অঙ্ক ছুঁয়েই বিদায় নেন তাইয়েব তাহির। টানা চার টি-টোয়েন্টিতে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর এবার শুরুটা ভালো করেন আবদুল্লাহ শফিক। ছক্কায় ওড়ান ফরিদ আহমেদ ও মোহাম্মদ নবিকে। তার ১৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস থামান রশিদ খান। এক প্রান্ত আগলে রাখা সাইম এরপর ইনিংস সেরা ৪৫ রানের জুটি গড়েন ইফতিখার আহমেদের সঙ্গে। ফিফটির দুয়ারে গিয়ে মুজিব উর রহমানের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন সাইম। ইফতিখার ২৫ বলে ২ ছক্কায় করেন ৩১ রান। আগের ম্যাচে ফিফটি করা ইমাদ ওয়াসিম এবার থামেন ১৩ রানে। শাদাবের ১৭ বলে ৫ চারে ২৮ রানের সুবাদে বড় পুঁজি গড়ে পাকিস্তান। আফগানিস্তানের ৬ জন হাত ঘুরিয়ে উইকেট পান সবাই। ২৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার অফ স্পিনার মুজিব। রান তাড়ায় রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ উদ্বোধনী জুটিতে তুলে ফেলেন ৩৫ রান। এরপর দ্রুত ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। গুরবাজ ১১ বলে করেন ১৮। অভিষিক্ত সেদিকউল্লাহ ১১ রান করতে খেলেন ১৯ বল। ইব্রাহিম জাদরান যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। উসমান ঘানি ও মোহাম্মদ নবি এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে ৩১ রানের এ জুটি ভাঙতেই আবার পথ হারিয়ে ফেলে আফগানরা। নবি বিদায় নেন দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে। মুখোমুখি প্রথম বলে ইহসানউল্লাহর বাউন্সারে হেলমেটের গ্রিলে আঘাত পান নাজিবউল্লাহ জাদরান। তার থুতনি থেকে রক্ত বেরুতে দেখা যায়। ছেড়ে যান মাঠ। করিম জানাত পান গোল্ডেন ডাক এর তেতো স্বাদ। শাদাব খান পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন ঘানি ও মুজিবকে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। এরপর রশিদ খানের ১৬ ও নাজিবউল্লাহর কনকাশন বদলি নামা আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ২১ রানের সুবাদে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমাতে পারে আফগানরা। পাকিস্তান এই সিরিজে বিশ্রাম দেয় নিয়মিত অধিনায়ক বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ ও ফখর জামানকে। দেশটির বিপক্ষে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার সুযোগ পেয়েই জিতে নিল আফগানিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৮২/৭ (হারিস ১, সাইম ৪৯, তাহির ১০, শফিক ২৩, ইফতিখার ৩১, ইমাদ ১৩, শাদাব ২৮, নাওয়াজ ৫*, ওয়াসিম ৯*; ফারুকি ৪-০-২৫-১, মুজিব ৪-০-২৮-২, নবি ৩-০-৩২-১, ফরিদ ২-০-২৮-১, রশিদ ৪-০-৩১-১, জানাত ৩-০-৩২-১)
আফগানিস্তান: ১৮.৪ ওভারে ১১৬ (গুরবাজ ১৮, সেদিকউল্লাহ ১১, ইব্রাহিম ৩, ঘানি ১৫, নবি ১৭, নাজিবউল্লাহ (০, রিটায়ার্ড হার্ট), করিম ০, রশিদ ১৬, মুজিব ০, ফরিদ ৫, ওমরজাই ২১, ফারুকি ১*; ইমাদ ৩-০-২৫-১, জামান ৩.৪-০-২০-১, ইহসানউল্লাহ ৪-০-১৩-১, ওয়াসিম ৩-০-১৩-১, শাদাব ৪-০-১৩-৩, নাওয়াজ ১-০-১১-০)
ফল: পাকিস্তান ৬৬ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১-এ জয়ী আফগানিস্তান
ম্যান অব দা ম্যাচ: শাদাব খান
ম্যান অব দা সিরিজ: মোহাম্মদ নবি
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা