জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) বাজার মনিটরিং দলগুলো দেখেছে যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নির্ধারিত ১৪৯৮ টাকার ১২ কেজি এলপিজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায়।
বিইআরসি আইন অনুযায়ী প্রতি মাসের শুরুতে এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়।
বুধবার রাজধানীর ডিএনসিআরপি সদর দপ্তরে এলপিজি অপারেটর, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘এলপিজি অপারেটিং কোম্পানিগুলোর বিক্রয় কেন্দ্র থেকে খুচরা বিক্রেতাদের বিক্রয় কেন্দ্রের সর্বত্র পণ্যগুলো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।’
এসময় ডিএনসিআরপির অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সমস্ত এলপিজি অপারেটর, ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছিল।
এছাড়াও, এলপিজি অপারেটররা ডলার সংকট, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং এলসি খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলির অনীহাকেও দায়ী করছে যখন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিএবি) এলপিজি বাজারে নৈরাজ্যের জন্য বিইআরসি এবং ডিএনসিআরপির নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছে।
মেঘনা এলপিজির মাহবুব আলম বলেন, ‘আমাদেরকে ডলারের বিনিময় হার হিসেবে ১০৬ টাকা দিতে হবে আগের দাম ছিল ৮৫ টাকা।
তিনি বলেন, শিপিংয়ের মালবাহী চার্জ প্রতি টন ৯০ ডলার থেকে ১২০ ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচ বেড়েছে।
বসুন্ধরা এলপিজির বিপণন প্রধান জাকারিয়া জালাল বলেন, ‘এসবই আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়েছে। কিন্তু প্রতি মাসে দাম ঘোষণা করার সময় বিইআরসি এই ধরনের খরচ বিবেচনা করছে না।’
ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতাদের প্রতিনিধিরা বলেছেন যে বিইআরসি ডিলারদের সমস্ত খরচ বাড়লেও তাদের মার্জিন বাড়ায়নি।
বিইআরসি সচিব খলিলুর রহমান এলপিজি অপারেটর এবং ডিলারদের অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন যে নিয়ন্ত্রক তাদের খরচ বৃদ্ধির বৈধ নথি জমা দিতে বলেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ডিলার এবং এলপিজি অপারেটরদের কেউই বৈধ নথি জমা দেননি। বরং তারা এই বিষয়ে আরও সময় চেয়েছিল।’ বিইআরসি কোনো বৈধ নথি ছাড়া তাদের খরচ বৃদ্ধির দাবি বিবেচনা করতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সিএবি প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, বিইআরসি এবং ডিএনসিআরপি উভয়ই ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় যথেষ্ট ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোক্তারা চূড়ান্ত ভুক্তভোগী হচ্ছেন এবং তাদেরকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতার মূল্য দিতে হচ্ছে।
ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক বলেছেন যে তার কার্যালয় এই বিষয়ে আরও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সুপারিশ জমা দেবে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরার মতো কোম্পানি যাদের শেয়ার বাজারে ২০ শতাংশের বেশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
ডিএনসিআরপি কর্তৃক পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘যদি আমরা তাদের উৎপাদন বন্ধ করি, আপনি কি জানেন বাজারে কি প্রভাব পড়বে?’
তিনি আরও বলেন, বাস্তবতা হলো বিইআরসি চলতি মাসে ১২ কেজি এলপিজির দাম ২৬৬ টাকা বাড়িয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে দাম আরও বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আবার এলপিজির দাম ৩০০ টাকা বাড়ানো হলে বাজার ঠান্ডা থাকবে না। বরং বাজার অপারেটররা তা আরও বাড়াবে। চিনির দামের ক্ষেত্রে আমরা এটি অনুভব করেছি।’
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি