এম. মছব্বির আলী, মৌলভীবাজার:
কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য ২০০৩ সালে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এশু। নিয়োগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর যোগদানপত্র পাননি তিনি। চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে এশু কাপড় ব্যবসা শুরু করেন। ১৮ বছর পর জানতে পারেন প্রতারণার মাধ্যমে তার নাম পরিচয় ব্যবহার করে ওই পদে চাকরি করছেন আরেকজন। জালিয়াতির বিষয়টি তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার এজি মাহমুদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেল সুপার মো: ইকবাল হোসেনের স্বমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো: কামাল হোসেন জানান, আমরা তদন্ত করে তিনজনের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। এর মধ্যে কারারক্ষী পদে দায়িত্বরত মঈন উদ্দিন খান পরিচয়ধারী একজনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। কারারক্ষী পদে দায়িত্বরত জহিরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম পরিচয়ধারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছি এবং এটি চলমান রয়েছে। ভুক্তভোগীদের চাকরি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দেবেন।
তৎকালীন সময়ে নিয়োগ জালিয়াতিতে সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত আছেন তদন্তে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া গেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি অনেক আগের ঘটনা। তখন যারা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেছেন অনেকেই এখন হয়তো অবসরে। তাই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
জানা যায়, জহিরুল ইসলাম এশু ২০০৩ সালে কুলাউড়া পৌর শহরের জয়পাশা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে তিনি জয়চন্ডী ইউনিয়নের কামারকান্দি এলাকায় বসবাস করছেন। ওই সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য সিলেটে গিয়ে শারীরিক ফিটনেস এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে নিয়োগের বিষয়ে কুলাউড়া থানা থেকে অধিকতর তদন্ত করা হয়। তবে চাকরির যোগদানপত্র তার কাছে পৌঁছায়নি।
গত ৮ ডিসেম্বর সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক কার্যালয় থেকে ঠিকানা ও পরিচয় যাচাইয়ের জন্য কুলাউড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম খাঁন খছরুর কাছে কারারক্ষী ক্রমিক নম্বর ২২০১৪ নম্বর মূলে ‘জহিরুল ইসলাম এশু’ চাকরি করেন, এই মর্মে চিঠিটি আসে। পরে জহিরুল ইসলাম কারারক্ষী পদে তাঁর নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অন্য কেউ চাকরি করছেন। এই বিষয়টি জানিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-১১৮২) করেন।
ভুক্তভোগী জহিরুল ইসলাম এশু জানান, ‘কারারক্ষী পদে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে উর্ত্তীণ হয়েছিলাম। কিন্তু নিয়োগপত্র পাইনি। ১৮ বছর পর জানতে পারলাম আমার নাম-পরিচয় জালিয়াতি করে আরেকজন চাকরি করছে। আমি সেই চাকরিটি ফিরে পেতে চাই।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি