নিউজ ডেস্ক :
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে থাকা নিবন্ধিত দল খেলাফত মজলিস জোট ছেড়েছে। শুক্রবার (১লা অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের সিগাল রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑনায়েবে আমির জোবায়ের আহমেদ চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক মিনহাজুল আবেদিন, যুগ্ম মহাসচিব মোনতাছির আলী, আবদুল জলিল প্রমুখ। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দলের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার বৈঠকে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় অধিকাংশ নেতা জোট ছাড়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কারণ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের পর ২০১৯ সাল থেকে ২০ দলীয় জোটকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। সে কারণে খেলাফত মজলিস এখন থেকে কোনো জোটের সঙ্গে থাকবে না। তবে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। শুক্রবার (১লা অক্টোবর) বাদ জুমা মজলিশে শুরার বৈঠক হয়। বৈঠকে সারা দেশের সব জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মজলিশে শুরার প্রায় ২০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। দলের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপির কার্যকলাপে হতাশা থেকেই জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় খেলাফত মজলিস। তাদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে জোট নিষ্ক্রিয়। বিশেষ করে, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পূর্বাপর রাজনৈতিক কর্মপন্থা নির্ধারণে ২০ দলের শরিকেরা গুরুত্ব হারায়। তাছাড়া বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সাম্প্রতিক কার্যক্রমে তাদের মনে হয়েছে, তারা জোটে থাকা ইসলামি দলগুলোর ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী নন। খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোটে থাকা একমাত্র নিবন্ধিত ইসলামি দল। এর বাইরে যে কয়টি ইসলামি দল জোটে আছে, সেগুলো মূলত এর আগে বেরিয়ে যাওয়া দলগুলোর খ-িত অংশ। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামি ঐক্যজোট (আবদুর রকিব) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (মনসুরুল হাসান) আরেকটি অংশ ২০ দলীয় জোটে থাকলেও তাদের নিবন্ধন নেই। এর আগে গত ১৪ জুলাই বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছাড়ে কওমি আলেমদের পুরোনো দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। দলটির নেতারা ওই দিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসার কয়েক ঘণ্টা পর জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন। গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে সহিংসতার মামলায় জমিয়তের ৬০ জন নেতাকর্মী আসামি হন। এ পরিস্থিতি দলটিকে জোট ছাড়তে বাধ্য করেছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়। যদিও জোট ছাড়ার পর জমিয়তসহ সব দলই বিএনপির বিরুদ্ধে ‘অবহেলার’ অভিযোগ করেছে। অপরদিকে বিএনপি বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জোট ছাড়ে জমিয়ত। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে সহিংসতার মামলায় গত ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন। এখন পর্যন্ত তার জামিন হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে জোট ছাড়ার পরে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। সংবাদ সম্মেলনে তার মুক্তির দাবি জানানো হয়। ১৯৯৯ সালের ৬ জানুয়ারি বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামি ঐক্যজোট নিয়ে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। তখন ইসলামি ঐক্যজোটের পাঁচটি শরিক দলের অন্যতম ছিল শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। একপর্যায়ে শায়খুল হাদিস চারদলীয় জোট ছেড়ে গেলে একাংশ থেকে যায়, তারা খেলাফত মজলিস নামে নতুন দল গঠন করে নিবন্ধন নেয়।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম