২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই ২১ আগস্ট দিনের বেলায় আইভি রহমানসহ আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়। বিচার হয়েছে। এর (ট্রায়াল কোর্ট) রায় দেওয়া হয়েছে। এই রায় শিগগিরই কার্যকর করা উচিত।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হামলায় ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ১ হাজার জন আহত হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও বারবার গ্রেনেড বিস্ফোরণে তার শ্রবণশক্তি বিঘ্নিত হয়।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান।
এরই মধ্যে ঢাকার একটি আদালত ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ১৮ দণ্ডিত আসামি পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে।
আজকের আলোচনায় সভাপতিত্ব করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রেনেড হামলা মামলার কিছু সাজাপ্রাপ্ত আসামি এখন কারাগারে থাকলেও মূল হোতা দেশের বাইরে আছেন।
তারেক রহমানের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, তিনি বন্ডে সই করে বিদেশে গেছেন। সাহস থাকলে সে ফিরে আসে না কেন? আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছি। সে এখন এর সুবিধা নিয়ে বড় বড় কথা বলছে। তার সাহস থাকলে ফিরে আসা উচিত। বাংলাদেশের জনগণ সেই খুনিকে রেহাই দেবে না।
ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মৃতি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং সে সময় তিনি কী ভূমিকা পালন করেছিলেন সেটাই প্রশ্ন। তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন খালেদা পুলিশকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে বাধা দিয়েছেন এবং কেন হামলার প্রমাণ রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেননি। এটা কী প্রমাণ করে? এই গ্রেনেড হামলায় খালেদা, তারেক ও তাদের লোকজন যে সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তদন্তে তাও বেরিয়ে এসেছে।
বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের গণহত্যা ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা এবং ২১ আগস্ট ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা তার দলের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
২০০৪ সালের এই দিনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নৃশংস হামলা চালানো হয়। প্রধান টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন-আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২