November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, March 7th, 2024, 8:28 pm

৩০ বছর পর রঙিন পর্দায় ‘সিঁদুর নিও না মুছে’

অনলাইন ডেস্ক :

দীর্ঘ ৩০ বছর পর রঙিন হয়ে পর্দায় আসতে চলেছে ‘সিঁদুর নিও না মুছে।’ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে অভিনেত্রী জানাহারা ভূঁইয়া ১৯৮৬ সালে নির্মাণ শুরু করেছিলেন ‘সিঁদুর নিও না মুছে’। প্রযোজনা ও পরিচালনার পাশাপাশি ছবিটিতে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। অভিনয়ে আরো ছিলেন ওই সময়ের জনপ্রিয় শিল্পীরা—অঞ্জনা, মাহমুদ কলি, ইলিয়াস জাভেদ, প্রবীর মিত্র, সুব্রত, মিজু আহমেদ প্রমুখ। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৯২ সালে ছবিটির নির্মাণ সম্পন্ন করেন। তত দিনে রঙিন ছবির দাপট শুরু হয় সিনেমা হলে। পরের বছর মাত্র দুটি হলে মুক্তি পেয়েছিল ১৪ রিলের সাদা-কালো প্রিন্টের ছবিটি। বারবার চেষ্টা করেও আর কোনো হলে ছবিটি মুক্তি দিতে পারেননি জাহানারা। হারিয়ে যায় ছবির রিলও।

দীর্ঘ সময় পর কোনো রকমে ১০টি রিল উদ্ধার হলেও চারটি রিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তারও কয়েক বছর পর পাওয়া গেল সেই চারটি রিল। গত বছর ১২ জুলাই মুক্তির দীর্ঘ ৩০ বছর পর অভিনেত্রীর ভাই মনজুর এলাহী বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে জমা দিয়েছিলেন ছবিটি। জাহানারা ভূঁইয়া এখন আমেরিকা আছেন। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। অভিনেত্রীর শেষ ইচ্ছা, সাদা-কালো ছবিটি রঙিন করে অন্তত একটি প্রেক্ষাগৃহেও যেন মুক্তি দেওয়া হয়। বোনের সেই ইচ্ছা পূরণ করতে নেমে পড়েন এলাহী। মগবাজার মিডিয়া গলির এ ওয়ান প্রোডাকশন হাউসে কালারিস্ট আশিকুজ্জামান অপু ও সজিবুজ্জামান দীপু রাত-দিন পরিশ্রম করে ছবিটির কালার করেছেন।

গত বুধবার সম্পন্ন হলো সেই কাজ। দীপু বলেন, ‘এটা খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আমি ও আমার বড় ভাই অপু টানা পরিশ্রম করেছি। এলাহী চাচা পুরো ছবিটি দেখার পর সন্তুষ্ট হয়েছেন। তিনি যেমনটা চেয়েছিলেন আমরা তেমনটাই করতে পেরেছি বলেও জানিয়েছেন। প্রতিটি ফ্রেম ও শিল্পীকে আমরা সুতা ধরে ধরে কালার করেছি। পরিশ্রম হলেও কাজটি করে শান্তি পেয়েছি। বলতে পারেন, ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম আমরা।’

জাহানারা ভূঁইয়ার ভাই মনজুর এলাহী বলেন, ‘আমার বোনের ইচ্ছা পূরণ করতেই ছবিটি কালার করেছি। এবার হলে মুক্তি দিতে পারলেই শান্তি। আমার বোন একাধারে পরিচালক, গীতিকার, প্রযোজক ও অভিনেত্রী ছিলেন। এই ছবিতে তাঁর সব গুণ ফুটে উঠেছে। ছবির গীত রচনা, সংলাপ, চিত্রনাট্য, প্রযোজনা ও পরিচালনার দায়িত্ব একাই পালন করেছেন। ছবিতে গান গেয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, আবিদা সুলতানা, এন্ড্রু কিশোর ও রুনা লায়লা। সংগীত পরিচালনা করেছেন আবু তাহের। সব মিলিয়ে দারুণ একটা ছবি হয়েছিল। কিন্তু কেন জানি হলে ছবিটি চালাতে পারেননি তিনি। বিখ্যাত প্রযোজক-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্ত্রী হয়েও ওই সময়ের চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে ছবিটি চালানোর ব্যাপারে সহযোগিতা পাননি। এটা খুবই দুঃখজনক। তবে এবার আমি চেষ্টা করব ছবিটি হলে মুক্তি দিয়ে তাঁর শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে।’