অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা, সৌদি আরব ও স্পেনে গিয়ে এসব দেশের নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করেন। এরপর টাকা তুলে নেন বুথ থেকে। এভাবে প্রায় ৪০টি দেশের বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের পর আসেন বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্কেমিং চক্রের এই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম হাকান জানবুরকান (৫৫)। তিনি তুরস্কের নাগরিক। সম্প্রতি ভারতে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান-১ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের নাগরিক মো. মফিউল ইসলাম। এসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়। বুধবার (১৯ জানুয়ারী) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তুরস্কের নাগরিক গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। এরপর চলতি বছরের ২-৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে কার্ড ক্লোনিং স্কেমিংয়ের মাধ্যমে শতাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। ইস্টার্ন ব্যাংক অ্যান্টি ফেমিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় অ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে। ফলে তারা হ্যাকারদের হাত থেকে স্কেমিং রোধ করতে সক্ষম হয়। এই নাগরিক একাধিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানান সিটিটিসির প্রধান। তিনি বলেন, এর আগে ২০১৬, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালেও বাংলাদেশে আসেন হাকান জানবুরকান। তখনও তার উদ্দেশ্য ছিল বুথ থেকে টাকা তুলে নেওয়া। সে সময় বাংলাদেশে এসে তার সহযোগী গ্রেপ্তার মফিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই মফিউল ইসলামের ভাই একই অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে ভারতে জেলে রয়েছেন। সিটিটিসি প্রধান বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তুরস্কের ওই নাগরিক বাংলাদেশে এসে পল্টনে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। এরপর ২-৪ জানুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংকের বিভিন্ন বুথে গিয়ে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে টাকা ওঠানোর চেষ্টা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তুরস্কের এই নাগরিক জানান, ভারতের আসামে পল্টন বাজার পুলিশ স্টেশনে এটিএম স্কেমিং মামলায় দুই বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। তখন তারা ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন। দেশটিতে জেলে থাকার সময় আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ প্যান্ট হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পালিয়ে যান তুরস্কের নাগরিক। পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপাল পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন। এই চক্রে একাধিক বাংলাদেশি, তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। কার্ড ক্লোনিং অপরাধে আরও কারা জড়িত এসব বিষয় জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে বলে জানান আসাদুজ্জামান। কোন ভিসায় হাকান জানবুরকান বাংলাদেশে এসেছিলেন- জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি ব্যবসায়িক ভিসায় বাংলাদেশে আসেন।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম