জেলা প্রতিনিধি, শেরপুর :
১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর শেরপুর পাকিস্তানের দখলদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। বাংলার মুক্তিবাহিনী ও ভারতের মিত্রবাহিনী যৌথভাবে শেরপুরকে মুক্ত করতে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে।
শেরপুর, জামালপুর, কামালপুর ও টাঙ্গাইল সেক্টর-১১ এর অধীনে ছিল এবং কর্নেল তাহের ছিলেন এর কমান্ডার। শেরপুরের ৮৪ জন বীর সন্তান পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন দিয়েছেন। শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩০-৪০টি স্থানে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৯৭১ সালের ২৬শে এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শেরপুর শহরে প্রবেশ করে এবং গুলিবর্ষণ শুরু করে। তারা শনিবিগ্রহ মন্দিরের পুরোহিতকে হত্যা করে। তারপর তারা চালায় বেপরোয়া লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, দখল, ধর্ষণ, নৃশংস গণহত্যা।
১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন নিরীহ পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা।
স্থানীয় দালালদের সহায়তায় পাকসেনারা শ্রীবরদীর জগৎপুর আক্রমণ করে ৬১ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে
১১ নভেম্বর । সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের ১৩ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রুদের আক্রমণের নির্দেশ দেন। ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর শেরপুর-বকশীগঞ্জ সড়কে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ করে মেজর আইয়ুবসহ পাকবাহিনীর দুই প্লাটুন সৈন্যকে হত্যা করে।
২৪ নভেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের সুর্যদী গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের লাগাতার প্রতিবাদে ৪ ডিসেম্বর কমলাপুর ক্যাম্পের পাকসেনারা আত্মসমর্পণ করে। একপর্যায়ে তারা মনোবল হারিয়ে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর রাতে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে ফিরে যায়।
৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ শেরপুর পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। ওই দিন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারে করে শেরপুর শহরের শহীদ দরগ আলী পার্কে অবতরণ করেন। শেরপুরবাসী তাকে স্বাগত জানিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ায় ।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি