April 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 18th, 2022, 7:13 pm

‘৮ বছরে ৫১ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ কয়েক হাজার’

ফাইল ছবি

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ২৮০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ‘সুযোগ, মর্যাদা, স্বাধীনতা ও উন্নত জীবন’ পাওয়ার আশায় নিজ দেশ ছেড়েছেন।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক রুট ধরে অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন এবং পাচারকারীদের নিষ্ঠুরতার কারণে তাদেরকে (অভিবাসীদের) ভয়াবহ মূল্য দিতে হয়।’

রবিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বার্তায় গুতেরেস এ কথা বলেন।

তবে এই অভিবাসীদের ৮০ শতাংশেরও বেশি যারা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেন, তাদেরকে ‘অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, গতিশীলতা ও মেধার’ শক্তিশালী চালক হিসেবে কৃতিত্ব দেন তিনি।

জাতিসংঘের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেছেন, গত আট বছরে অন্তত ৫১ হাজার অভিবাসী মারা গেছেন এবং আরও কয়েক হাজার নিখোঁজ হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সংখ্যার পেছনে একজন মানুষ রয়েছেন; যিনি হয়ত কারও বোন, ভাই, মেয়ে, ছেলে, মা বা বাবা।’

তিনি ফের মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘অভিবাসীদের অধিকার, মানবাধিকার।’

গুতেরেস বলেন, তাদের অবশ্যই বৈষম্যহীনভাবে সম্মান করতে হবে।

‘সাধ্যমতো সব কিছু করুন’

মানবিক বাধ্যবাধকতা এবং নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা হিসেবে গুতেরেস বিশ্বকে তাদের জীবনহানি রোধ করতে ‘সম্ভবপর সবকিছু করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিবাসন সংকট নেই; সংহতির সংকট আছে

মহাসচিব তার বার্তার উপসংহারে বলেছেন, অভিবাসন সংকট নেই; সংহতির সংকট আছে। ‘আজ ও প্রতিদিন, আসুন আমাদের সাধারণ মানবতাকে রক্ষা করি এবং সকলের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত করি।’

মৌলিক অধিকার আদায় করুন

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রধান, গিলবার্ট এফ হাউংবো, বিশ্বের ১৬৯ মিলিয়ন অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।

দিবসটি উপলক্ষে দেয়া তার বার্তায় তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও ভালভাবে নিশ্চিত করতে হবে… তারা যাতে [অভিবাসীরা] তাদের মৌলিক মানব ও শ্রম অধিকারগুলো যাতে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়।’

গিলবার্ট আরও বলেন, নিজেদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে অক্ষম অভিবাসী শ্রমিকেরা ‘সমাজে তাদের অবদান দেখাতে অদৃশ্য, দুর্বল ও অবমূল্যায়িত’ হয়।

তিনি বলেন, জাতি, জাতীয়তা ও লিঙ্গভিত্তিক বিভিন্ন বৈষম্যের জন্য, তাদের অধিকার আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

ন্যায্য শ্রম অভিবাসন

এদিকে, আইএলও ন্যায্য শ্রম অভিবাসনকে বাস্তবে পরিণত করতে সরকার, নিয়োগকর্তা ও কর্মীদের সমর্থন করে।

আইএলও প্রধান আরও বলেন, সকল কর্মচারীদের মতো অভিবাসী শ্রমিকরাও শ্রমের মান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষার অধিকারী। তারা বৈষম্যহীনভাবে সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সমষ্টিগত দর কষাকষি, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ প্রাপ্য।

তাদের সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন ও স্বীকৃতিরও অধিকার থাকা উচিত।

এই অধিকারগুলোকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য গিলবার্ট ন্যায্য নিয়োগের ওপর মূল জোর দেন। যা অভিবাসী কর্মীদের জন্য নেয়া নিয়োগ ফি বাদ দেয়া, মানব পাচার এবং জোরপূর্বক শ্রম নির্মূল করতে সাহায্য করতে পারে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) প্রধান আন্তোনিও ভিটোরিনো তার বার্তায় অভিবাসীদেরকে ‘উন্নয়ন ও অগ্রগতির ভিত্তিপ্রস্তর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন,‘অভিবাসনের রাজনীতিকরণ, শত্রুতা ও বিভেদমূলক আখ্যানের কারণে, আমরা নিজেদেরকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারি না।’

—-ইউএনবি