অবশেষে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার(৬ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
ভার্চুয়াল এই সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তবে বৈঠকে নেপালের বিদ্যুতের দাম প্রকাশ করা হয়নি। কারণ, এই প্রস্তাব পরে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
এর আগে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি প্রায় চূড়ান্ত।
শীতের আগেই নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা ছিল, যাতে শীতকালে বাংলাদেশ তার উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ নেপালে রপ্তানির সুযোগ পায়।
শীতকালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায় এবং নেপালে তা বেড়ে যায়।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নেপাল থেকে প্রাথমিকভাবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির অনুমতি দিতে সম্মত হয় ভারত।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৪-১৫ মে পটুয়াখালীতে বাংলাদেশ-নেপাল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতাবিষয়ক জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটি (জেএসসি) ও জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির (জেডব্লিউসি) দুই দিনের বৈঠক হয়। এতে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
বৈঠকের আগে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশ সৌদ ঢাকা সফর করেন এবং বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি নেপালের প্রায় ৬০ হাজার মেগাওয়াট পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ভারতে ভূখণ্ড দিয়ে বহরমপুর-ভেড়ামারা সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে।
সূত্র জানায়, চুক্তির আওতায় একটি ভারতীয় কোম্পানির মাধ্যমে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে এটিই প্রথম বিদ্যুৎ আমদানি ভারতের। এরপর বাংলাদেশের কাছে তা বিক্রি করবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল একটি ত্রিপক্ষীয় বা আঞ্চলিক চুক্তি করতে চায় এবং ভারত এ বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি চায়।
বর্তমানে একই ধরনের ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভ্যাপার নিগম (এনভিভিএন) বিপিডিবির কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে।
ঢাকা ও কাঠমান্ডুর মধ্যে বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে (এনইএ) এনভিভিএন এবং বিপিডিবি উভয়ের সঙ্গেই চুক্তি সই করতে হবে।
৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি পরিকল্পনার পাশাপাশি ভারতীয় কোম্পানি জিএমআরের মাধ্যমে নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও নেপাল এখনও তিন দেশের মধ্যে উপআঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাণিজ্য সহজতর করতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সইয়ের জন্য ভারতকে চাপ দিচ্ছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম
সম্পদের অপচয় ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক অটোমেটেড সরকারি আর্থিক সেবা