অনলাইন ডেস্ক :
ওয়ানডে, টেস্টের পর টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অপেক্ষায় নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তিন সংস্করণের কোনোটিতেই তিনি নিয়মিত অধিনায়ক নন। তিনি যদিও কয়েকবারই বলেছেন যে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তবে আপাতত সেই প্রস্তুতি নেই বিসিবির। বরং সাকিব আল হাসানকেই সব সংস্করণে দায়িত্বে রাখার ইচ্ছার কথা জানালেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। সাকিবের চোটে এবারের বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন শান্ত। পরে ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও নেতৃত্ব দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। সাকিব এখনও সেরে না ওঠায় শান্তর নেতৃত্বেই নিউ জিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ।
আপাতত ক্রিকেট মাঠে না থাকলেও সাকিব নেমে পড়েছেন রাজনীতির ময়দানে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লিগের হয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে লড়াই করবেন তিনি। গত মার্চে ৩৬ পেরিয়েছে তার বয়স। সব মিলিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন এখন উঠছে নিয়মিতই। ধোঁয়াশার কিছুটা অবশ্য দূর করেছেন সাকিব। যুক্তরাষ্ট্রে সোমবার একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, জাতীয় দলে বেশি সময় দিতে সামনের দিনগুলোতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার পরিকল্পনা আছে তার। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে চাওয়ার কারণে সাকিবকে জাতীয় দলের সিরিজে পাওয়া নিয়ে নানাসময়ে টানাপোড়েনে থাকতে হয়েছে বিসিবিকে। সেই সাকিবের ভাবনার পরিবর্তনকে বোর্ডও সাদরে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই স্বস্তির কথাই বললেন জালাল ইউনুস। “ওর (সাকিব) কথা মিডিয়াতে দেখেছি। এটা আনন্দের ব্যাপার। এখন সে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে দেশের ক্রিকেটের ওপর বেশি মনোযোগ দেবে। এটা আমাদের জন্য বড় একটা স্বস্তির খবর। আমরা চাই, যতগুলো সংস্করণ আছে, সে যেন আমাদের দেশের জন্য খেলুক। এটা আমাদের কামনা।” আগেই দুই সংস্করণের অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। গত অগাস্টে তামিম ইকবাল ওয়ানডের দায়িত্ব ছাড়ার পর এই সংস্করণেও দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত ছুটি ও চোটসহ নানা পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়ে জাতীয় দলে সাম্প্রতিক সময়ে তেমন নিয়মিত নন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
বিশ্বকাপের আগে টি-স্পোর্টসে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এই টুর্নামেন্ট শেষে একদিনও আর অধিনায়কের দায়িত্বে থাকবেন না তিনি। তবে সাকিবকে নিয়ে বিসিবির ভাবনার পরিবর্তন আসেনি, সেটিই আরেকবার নিশ্চিত করলেন জালাল ইউনুস। বরং সামনেও লম্বা সময় তিনি নেতৃত্বের ভার বয়ে নেবেন বলেই আশা করে বোর্ড। “এখানে আসলে (অধিনায়কত্ব নিয়ে) নতুন করে ভাবনার কিছু আসে না। সে (সাকিব) এখনও আমাদের অধিনায়ক। এখন আমরা শান্তকে দায়িত্ব দিয়েছি। শান্তকে আমরা বলেছি যে, সামনের দুইটা সিরিজ আছে, যেটা নিউ জিল্যান্ড সিরিজ, সেজন্য তাকে অধিনায়কত্ব দিয়েছি।” “সাকিবকে একটা লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও সে সব সংস্করণের অধিনায়ক।
সাকিব ফিরলে আমরা ধরে নিচ্ছি সে-ই অধিনায়ক। এখন সামনে সে অধিনায়ক থাকবে কী থাকবে না, এরকম কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। সে জানে সে এখনও অধিনায়ক। আমরাও তাকে চাই। এরই মধ্যে তাকে সেই দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি।” প্রাথমিকভাবে সাকিবের সহ-অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল লিটন কুমার দাসকে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে সাকিবের অনুপস্থিতিতে তার নেতৃত্বে ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওয়ানডেতে লিটনকেও বিশ্রাম দেওয়া হলে অধিনায়কত্ব পান শান্ত।
এরপর বিশ্বকাপে শান্তকেই আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সহ-অধিনায়ক করা হয়। যা থেকে বার্তা মেলে, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য হয়তো শান্তর কথাই ভাবছে বোর্ড। এবার নিউ জিল্যান্ড সফরে শান্তর ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজকে। বিসিবি পরিচালক জালালের ধারণা, সাকিব-পরবর্তী সময়ে এই দুজনকেই দেখা যাবে বাংলাদেশের নেতৃত্বে। “একটা সময় তো আসবে যে, সাকিব আর খেলবে না। হয়তো কোনো সংস্করণ থেকে সরে যাবে। তখন আমাদের হাতে অধিনায়ক হওয়ার মতো শান্ত-মিরাজ আছে। আমাদের (বোর্ডের) কাছে মনে হয়, বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো সামর্থ্য দুজনেরই আছে।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা