November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 19th, 2023, 8:10 pm

সিদ্দিকের শেষের শুরু

অনলাইন ডেস্ক :

সিদ্দিকুর রহমানের এশিয়ান ট্যুর ক্যারিয়ারে গত ১১ বছরে যা হয়নি, এবার তা হলো। এই প্রথমবারের মতো ‘ট্যুর কার্ড’ হারালেন তিনি। অর্থাৎ আগামী বছর চাইলেই এশিয়ান ট্যুরের যেকোনা টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না দেশসেরা এই গলফার। এই প্রথম যে র‌্যাংকিংয়ের (এশিয়ান ট্যুর অর্ডার অব মেরিট) ৬০- এর বাইরে ছিটকে গেছেন তিনি। সেই ২০১০ সালে ব্রুনেই ওপেন জয় দিয়ে শুরু সিদ্দিকের এশিয়ান ট্যুরে পথচলা। এতগুলো বছর বিশ্বের অন্যতম সেরা এই গলফ ট্যুরে বাংলাদেশকে গর্বের সঙ্গেই প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

ব্রুনেই ওপেন জয়ের বছরটা শেষ করেছিলেন র‌্যাংকিংয়ের ৭ নম্বরে থেকে। ২০১১-তে হন অষ্টম। সেরা বছর কাটান তিনি দ্বিতীয় এশিয়ান ট্যুর টুর্নামেন্ট ‘হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন’ জেতা ২০১৩ সালে। সেবার চতুর্থ স্থানে থেকে বছর শেষ করেছিলেন তিনি। সিদ্দিকের এরপর থেকেই বড় লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় একবার অর্ডার অব মেরিট জেতা, অর্থাৎ ট্যুরের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করার। কিন্তু সত্যি বলতে, সেই ফর্মে আর ফিরতে পারেননি তিনি। মধ্যে থেকে শেষ করতে পারেননি।

২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত ১৬তম (২০১৬ সালে) তাঁর সেরা অবস্থান। এবার প্রথমবারের শীর্ষ ৬০-এর বাইরেই চলে গেলেন তিনি। প্রতিবছর অর্ডার অব মেরিটের শীর্ষ ৬০ গলফার পরের বছরের এশিয়ান ট্যুরে সরাসরি সব টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পান। সিদ্দিক তো এভাবে ইউরোপিয়ান ট্যুরের টুর্নামেন্টও খেলেছেন এশিয়ান ট্যুরের যৌথ আয়োজনে। সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বকাপে। খেলেছেন মর্যাদার ইউরেশিয়া কাপে (ইউরোপ ও এশিয়ার শীর্ষ গলফারদের টুর্নামেন্ট। সেই সিদ্দিক প্রথমবারের মতো এশিয়ান ট্যুরেরই কার্ড হারিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় পতনটাই দেখলেন তিনি।

পিঠের চোটের কারণে বছরের শেষ টুর্নামেন্ট সৌদি ওপেন না খেলেই গত শনিবার দেশে ফেরা এই গলফার মেনে নিয়েছেন বাস্তবতা, ‘এ বছর কোনো টুর্নামেন্টেই খুব বেশি ভালো করতে পারিনি। প্রতিবছরই দেখবেন আমি কোনো না কোনো টুর্নামেন্টে ২, ৩ বা শীর্ষ পাঁচের মধ্যে শেষ করেছি। সেটাই র‌্যাংকিংটাকে অনেকটা এগিয়ে দেয়, এবার সেটাই হয়নি। সে কারণেই ছিটকে পড়তে হলো।’ সৌদি ওপেনের ঠিক আগে আগে তাইওয়ান গ্লাস ওপেনে তেমনই ভালো একটা অবস্থানের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় রাউন্ডে শীর্ষে উঠেছিলেন।

কিন্তু শেষ দুই রাউন্ডে ধারাবাহিকতা হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ২১তম। এ বছর খেলা ১৮টি টুর্নামেন্টের মধ্যে সেরা দশেও শেষ করতে পারেননি কোনোটা, সর্বোচ্চ অবস্থান ১৩তম চায়না ওপেনে। সিদ্দিকের ট্যুর কার্ড হারানোর এই শঙ্কাটা ছিল বছরের মাঝামাঝি থেকেই। যে কারণে এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়া নিয়ে ছিলেন দ্বিধায়। কারণ ওই সময়টাতেই হয়েছে তাইওয়ান মাস্টার্স। যে টুর্নামেন্টে এর আগে রানার আপ হয়েছেন, দুবার ছিলেন সেরা পাঁচে। ট্যুর কার্ড ধরে রাখতে সেই তাইওয়ান মাস্টার্স খেলবেন নাকি এশিয়াডে যাবেন সেটি নিয়েই ছিলেন দ্বিধায়।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য দেশের হয়ে এশিয়াডই বেছে নিতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তাতে পেশাদার ক্যারিয়ারের ক্ষতিটা আর পোষাতে পারেননি তিনি। ট্যুর কার্ড না থাকলে বছরের শুরুতে বাছাই টুর্নামেন্ট খেলতে হয়। ভীষণ কঠিন সে লড়াই। বাছাই না পেরিয়েও ‘কান্ট্রি স্পট’-এ কেউ কেউ তিন-চারটা টুর্নামেন্ট খেলতে পারেন। সিদ্দিক বাছাইয়ে যাচ্ছেন না, ‘এত দিন খেলার সুবাদে কোনো একটা ক্যাটাগরিতে হয়তো আমি কিছু টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেতে পারি। তবে সেগুলো হবে ছোট টুর্নামেন্ট। বড় কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে পারব না।’ সেই গুটিকয় টুর্নামেন্ট খেলে সিদ্দিকের পক্ষে কি সম্ভব পরের বছরের কার্ড নিশ্চিত করা? ৩৯ বছর বয়সে বর্ণিল এক ক্যারিয়ারের শেষের শুরুই কি দেখতে পাচ্ছেন তিনি!

সেরা পারফরম্যান্স
শিরোপা
(ব্রুনেই ওপেন ২০১০)
হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন (২০১৩)
রানার আপ
১০ টুর্নামেন্টে
শীর্ষ পাঁচ
৮ টুর্নামেন্টে
২০২৩
সেরা অবস্থান ১৩তম
চায়না ওপেন