November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 24th, 2023, 7:32 pm

মানুষ পুড়িয়ে হত্যা সহ্য করা হবে না: শেখ হাসিনা

ছবি: পি আই ডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে মানুষ পুড়িয়ে ও নির্বাচন বানচাল করে কাউকে ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, ‘মানুষ জ্বালিয়ে, নির্বাচন বন্ধ করে তারা যে ফায়দা হাসিল করে, তা বাংলার মাটিতে হতে দেওয়া হবে না।’

রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগকারীদের এবং তাদের নির্দেশ দাতাদের নিন্দা জানিয়ে বলেন, মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা মহাপাপ, কোনো ধর্মই এটা মেনে নেয় না।

তিনি বলেন, যদি কারো জনসমর্থন পেতে হয়, তাহলে তারা জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নে তাদের অঙ্গীকার তুলে ধরতে পারে।

যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থান ফিলিস্তিন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে জায়গাটি এখন রক্তক্ষয়ী হামলার শিকার। এমনকি হাসপাতালগুলোতেও হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকি অল্পবয়সী শিশু ও নারীরাও হামলা থেকে রেহাই পায়নি।

বাংলাদেশের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এটা আমাদের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা আমাদের দেশেও কিছু লোককে দেখছি রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করছে তারা।

তিনি বলেন, মানুষ হত্যার জন্য এই লোকেরা রেললাইন উপড়ে ফেলে এবং ট্রেনের বগিতে আগুন দেয়। ‘আমি জানি না এটা কী ধরনের রাজনীতি যে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। কেন এই আগুনের খেলা? কারো যদি আদর্শ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে, তারা জনগণের কাছে গিয়ে তাদের সামনে তুলে ধরতে পারেন।

সম্প্রতি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে মা ও তার কোলে থাকা একটি শিশু জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন করুণ দৃশ্য দেখতে চাই না। তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষের ক্ষতি করে পুড়িয়ে হত্যা করে তাদের কী লাভ হচ্ছে? এটা আমার প্রশ্ন। আমরা চাই এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ হোক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবতা সব ধর্মের শিক্ষা। তাই তার সরকার এই শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশ চালাচ্ছে।

তিনি ববলেন, ‘এই মাটিতে শ্রেণি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সবাই স্বাধীনভাবে বসবাস করবে। আমরা সব মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়ন কামনা করি।’

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, তিনি বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত করেছিলেন। কারণ তিনি চেয়েছিলেন সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।

বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।

তিনি বলেন, ‘যেখানে সব ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে এবং আমরা সবাই মিলে (ধর্মীয়) উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করি। আমি মনে করি বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ।’

শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে তার পক্ষ থেকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা বড়দিনের ক্যারোল ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন।

ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় নাইসেফরাস ডি’ক্রুজ এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বড়দিনের শুভেচ্ছা কার্ড তুলে দেন।

নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বড়দিনের কেক কাটেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি জুয়েল আড়ং, এমপি, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, এমপি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. এ হামিদ জমাদ্দার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান লীগের সভাপতি ড্যানিয়েল নির্মল ডি’কস্তা এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত আই কোরায়া প্রমুখ।

—–ইউএনবি