অনলাইন ডেস্ক :
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে নব্বই ছোঁয়া ইনিংস খেললেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সঙ্গে মোহাম্মদ নাওয়াজের ক্যামিওতে লড়াইয়ের পুঁজি পেল পাকিস্তান। শাহিন শাহ আফ্রিদির হাত ধরে বোলিংয়ের শুরুটাও দারুণ হলো তাদের। এ পর্যন্তই, বাকি সময়ে আর খুঁজে পাওয়া গেল না পাকিস্তানকে। গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেলের চমৎকার জুটিতে বড় জয় পেল নিউ জিল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৭ উইকেটে। ১৫৯ রানের লক্ষ্য ১১ বল হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। পাকিস্তানের অর্ধেকের বেশি রান একাই করেন রিজওয়ান। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬৩ বলে অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংস খেলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। আর কেউ ২৫ পর্যন্তও যেতে পারেননি।
রান তাড়ায় তিন ওভারের মধ্যে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারানোর ধাক্কা সামলে ৯৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৩৯ রানের রেকর্ড জুটিতে নিউ জিল্যান্ডকে জয়ের ঠিকানায় নিয়ে যান মিচেল ও ফিলিপস। এই সংস্করণে চতুর্থ উইকেটে নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি এটিই। ২০১৭ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে কেন উইলিয়ামসন ও কোরি অ্যান্ডারসনের ১২৪ রানের জুটি ছিল আগের রেকর্ড। যে কোনো উইকেটেই মিচেল-ফিলিপসের চেয়ে বড় জুটি নিউ জিল্যান্ডের আছে আর কেবল দুটি। ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ বলে ৭২ রান করে ম্যাচের সেরা মিচেল। ফিলিপস ৫২ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় খেলেন ৭০ রানের ইনিংস।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে প্রথম চার ম্যাচেই জিতল কিউইরা। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের সামনে এখন হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। প্রথম তিন ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে জেতা নিউ জিল্যান্ড সিরিজে প্রথমবার টস জিতে বোলিং নেয় এ দিন। দ্বিতীয় ওভারে ম্যাট হেনরি দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাইম আইয়ুবকে ফিরিয়ে। রিজওয়ান ও বাবর আজমের ব্যাটে রান আসতে থাকে দ্রুত। পাওয়ার প্লেতে পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তানের সংগ্রহ। প্রথম তিন ম্যাচে ফিফটি করা বাবর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি এবার (১১ বলে ১৯)। ফাখার জামান, সাহিবজাদা ফারহান ও ইফতিখার আহমেদও দলের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি।
দলকে বলতে গেলে একাই টানেন রিজওয়ান। ৩৮ বলে ফিফটি করেন তিনি। শেষের আগের ওভারে অ্যাডাম মিল্নেকে টানা তিন ছক্কায় ওড়ান নাওয়াজ। ৮৬ রান নিয়ে শেষ ওভার শুরু করা রিজওয়ান পারেননি সেঞ্চুরির কাছাকাছি যেতে। শেষ ওভারে স্রেফ ৬ রান দেন টিম সাউদি। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২টি করে শিকার ধরেন দুই পেসার হেনরি ও লকি ফার্গুসন। কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় নিউ জিল্যান্ড এ দিন পায়নি ডেভন কনওয়েকে। আগের ম্যাচে রেকর্ড ১৬ ছক্কায় ৬২ বলে ১৩৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলা ফিন অ্যালেন রান তাড়ায় আফ্রিদিকে টানা দুই চারে শুরু করেন। পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ওই ওভারেই ‘গোল্ডেন ডাক’ এর তেতো স্বাদ পেয়ে বিদায় নেন আরেক ওপেনার টিম সাইফার্ট। কনওয়ের জায়গায় সুযোগ পাওয়া উইল ইয়াং ৪ রান করে ফেরেন আফ্রিদির পরের ওভারে। ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে নিউ জিল্যান্ড তখন চাপে। সেখান থেকে শুরুতে দেখেশুনে খেলে দলকে এগিয়ে নেন মিচেল ও ফিলিপস। পরে তারা বাড়ান রানের গতি।
পাকিস্তান কিছু হাফ চান্সও পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি সেসব। মিচেলের সহজ একটি ক্যাচ ফেলেন ফারহান। ৩৫ রানে জীবন পেয়ে ৩৪ বলে সপ্তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি করেন মিচেল। ফিলিপস পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৪১ বলে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন দুজন। তাতে উড়ে যায় পাকিস্তান। একই মাঠে আগামীকাল রোববার হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৫৮/৫ (সাইম ১, রিজওয়ান ৯০*, বাবর ১৯, ফাখার ৯, ফারহান ১, ইফতিখার ১০, নাওয়াজ ২১*; সাউদি ৪-০-৩৬-০, হেনরি ৪-০-২২-২, মিল্নে ৪-০-৪৯-১, ফার্গুসন ৪-০-২৭-২, স্যান্টনার ৪-০-২৩-০)
নিউ জিল্যান্ড: ১৮.১ ওভারে ১৫৯/৩ (অ্যালেন ৮, সাইফার্ট ০, ইয়াং ৪, মিচেল ৭২*, ফিলিপস ৭০*; আফ্রিদি ৪-০-৩৪-৩, জামান ৪-০-৩০-০, রউফ ৩.১-০-২৯-০, ওয়াসিম ৩-০-২৪-০, নাওয়াজ ৪-০-৪১-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: ড্যারিল মিচেল
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা