বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান রিচার্ড হোল্ডেন এমপি।
ভারতের (বাণিজ্য ও বিনিয়োগ) বিষয়ে হাউস অব লর্ডসে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) প্রেসিডেন্ট ব্যারনেস স্যান্ডি ভার্মা এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক যুক্তরাজ্য সফর এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড হিথ এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও দুইবারের প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে তার বৈঠকের ৫২ বছর পূর্তিতে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন সম্প্রতি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর যুক্তরাজ্য সফরকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জনগণের নাগরিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার আদায়ের জন্য জীবনের অধিকাংশ সময়ই সংগ্রাম করতে গিয়ে ১৪ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন এবং ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য সংসদ সদস্য ও লর্ডসরাও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব বিকাশ ও উন্নয়নের প্রশংসা করেন। অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন ইন্ডিয়ার (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট) প্রেসিডেন্ট ব্যারনেস ভার্মা, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশের ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি ও আফজাল খান এমপি, ডিসিএমএস বিষয়ক সেক্রেটারি অব স্টেটের সাবেক পার্লামেন্টারি প্রাইভেট সেক্রেটারি পল ব্রিস্টো এমপি, শ্যাডো এসএনপির মুখপাত্র (হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ার) মার্টিন ডে এমপি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ার লর্ড বোয়াটেং, ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশন সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান স্যার স্টিফেন টিমস এমপি, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন ইন্ডিয়া (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট) এর ভাইস চেয়ার ওয়াটফোর্ডের লর্ড ডেভিড ইভান্স, পররাষ্ট্র বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ার ব্যারোনেস উদ্দিন কনজারভেটিভ, লেবার ও এসএনপি দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের স্মরণ করিয়ে দিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন গত ৫ বছর ধরে ৮ জানুয়ারির ঐতিহাসিক সফর উদযাপন করে আসছে। এই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য সফর এবং দুটি ঐতিহাসিক বৈঠকের মাধ্যমে আজকের গতিশীল বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘ভারতের জনগণের কাছে বঙ্গবন্ধুকে একজন ক্যারিশম্যাটিক ও দূরদর্শী নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে জাতিকে প্রশংসনীয়ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও ভারতের গণতন্ত্র, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিতভাবে উভয় দেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বের কারণে যুক্তরাজ্যের নিজস্ব প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন বজায় রাখতে সহায়তা করবে।’
আরেক বিশেষ অতিথি এবং অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ভাইস চেয়ার লর্ড বোয়াটেং বঙ্গবন্ধুকে অন্যতম ক্যারিশম্যাটিক নেতা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।’
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, সুলতান মাহমুদ শরীফ, সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এবং সৈয়দ মোজাম্মেল আলীসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৮ জানুয়ারি সফরের চমৎকার স্মৃতির বর্ণনা দেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম