September 22, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, February 8th, 2024, 8:52 pm

সিনেমা-মঞ্চ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওশাবা

অনলাইন ডেস্ক :

‘আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছা, ভালো লাগা-মন্দ লাগা অনেকের সঙ্গে মেলে না। কেন মেলে না? সেই প্রশ্ন যখন নিজেকে করি তখন বুঝি, সবকিছুর আগে আমার চাওয়া একটাই- শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখা। তাই সে কাজই বেছে নিই, যা শেষ করার পর অন্য রকম আত্মতৃপ্তি মেলে। সত্যি বলতে, যশ-খ্যাতির নেশায় যে কোনো কিছু করার ইচ্ছাও কখনও হয়নি। এ জন্যই স্রোতের বিপরীতে চলেছি সব সময়। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো কিছুর মোহে নিজের এই সিদ্ধান্ত বদলাব না। অবশ্য এ নিয়ে নানা রকম কথাও শুনতে হয়েছে।’ শিল্পীজীবনের ভাবনা নিয়ে একনাগাড়ে কথাগুলো বলে গেলেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। শিল্পচর্চা ধরে রাখতে পারাটাই জীবনের বড় প্রাপ্তি বলেন মনে করেন এই অভিনেত্রী।

তার কথায়, ‘অনেকে বলেছেন, অভিনয় যার পেশা, তার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বিলাসিতা ছাড়া কিছু নয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ কথা একেবারে মিথ্যা নয়। কিন্তু আমি যে মনের বিপক্ষে যেতে পারি না, তাহলে আর নিজেকে বদলাব কীভাবে! না-ই বা পারলাম অভিনেত্রী হিসেবে শীর্ষে জায়গা করে নিতে। পুরস্কার, সম্মাননা, বড় তারকার তকমা না-ই বা থাকল ক্যারিয়ারের ঝুলিতে। নিজের মতো করে যদি শিল্পচর্চা ধরে রাখতে পরি, সেটিই হবে বড় প্রাপ্তি।’ একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, তাঁর ভাবনার সঙ্গে কাজের খুব একটা অমিল নেই। যে জন্য নওশাবার প্রতিটি কাজেই দর্শক তাঁকে নতুনভাবে আবিষ্কারের সুযোগ পান।

আরও একবার এ অভিনেত্রীকে নতুনরূপে দেখার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন দর্শক। কারণ, ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেতে যাচ্ছে বন্ধন বিশ্বাস পরিচালিত এ অভিনেত্রীর নতুন ছবি ‘ছায়াবৃক্ষ’। যেখানে তিনি প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন ‘মনতুড়ি’ নামে এক চা শ্রমিকের চরিত্রে। এ নিয়ে নওশাবা বললেন, “অভিনয়জীবনে যে ক’টি ছবিতে অভিনয় করেছি, তার প্রায় প্রতিটি ছিল চেনাজানা পরিবেশ নিয়ে। সেদিক থেকে ‘ছায়াবৃক্ষ’ একেবারেই ভিন্ন রকম এক গল্পের ছবি। যেখানে আমার মনতুড়ি চরিত্রের মধ্য দিয়ে নারীর এক করুণ বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মনতুড়ি প্রতিদিন চা বাগানে কাজ করে, আর রাতে তাকে নাচতে হয় ম্যানেজারের মনোরঞ্জনের জন্য। অথচ তার স্বপ্ন দেশের একজন নৃত্যশিল্পী হওয়া। কিন্তু যে প্রতিকূল পরিবেশে তার জন্ম, বেড়ে ওঠা- সেখান থেকে স্বপ্ন পূরণ মোটেও সহজ নয়।

মনতুড়ির গল্প, তার ভাবনার জগৎ, আকাক্সক্ষা সুচারুরূপে পর্দায় বাস্তব করে তুলে ধরা মোটেও সহজ ছিল না। তবু অভিনয়ের জন্য এমন চরিত্র বেছে নিতে দ্বিতীয়বার ভাবিনি। এমন কিছু চরিত্রের মধ্য দিয়েই আমি নিজেকে পরিণত শিল্পী হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছি সব সময়।” নওশাবার এমন ইচ্ছা প্রকাশ অতীতেও দেখা গেছে। এমনকি আগামী ছবিগুলোতেও দর্শক তাঁকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দেখাতে পাবেন; যার মধ্যে ‘মেঘনা কন্যা’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে।

নারী পাচারের গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করেছেন ফুয়াদ চৌধুরী। এর পাশাপাশি ‘যত কা- কলকাতাতেই’ ছবিতে এ অভিনেত্রীকে দেখা যাবে নতুন এক ভূমিকায়। অনীক দত্ত পরিচালিত কলকাতার ছবিটিতে সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট কালজয়ী গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদারূপে দেখা যাবে আবির চট্টোপাধ্যায়কে। এ ছাড়া নতুন সিনেমা এবং মঞ্চের কাজ নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন নওশাবা। তবে গল্প, চরিত্র, নির্দেশক বদলে গেলেও কাজের বিষয়ে নওশাবার নিজস্ব ভাবনায় এতটুকু বদল চোখে পড়েনি। তাঁর কথায়, ‘যে শিল্পীসত্তাকে ধারণ করে চলি, তার বিকাশ ঘটাতে চ্যালেঞ্জিং কাজ করে যাব সব সময়। তবু সস্তা জনপ্রিয়তার স্রোতে গা ভাসাব না। এভাবেই চলেছি, চলব।’