অনলাইন ডেস্ক :
শের ক্রিকেটে আপাতত তাসকিন আহমেদকে নিয়ে চর্চা টেস্ট ক্রিকেটে তার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে এর ফাঁকেই তার ক্যারিয়ারের নতুন এক অধ্যায়ের জন্ম হয়ে গেল। বিপিএলে প্রথমবার নেতৃত্বের স্বাদ পেলেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামার ভিন্নতাও অনুভব করলেন। সেই ইতিবাচকতার প্রভাবে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছুর ছবি আঁকছেন অভিজ্ঞ এই পেসার। বিপিএল দিয়েই দেশের ক্রিকেটে প্রথমবার নাড়া দিয়েছিলেন তাসকিন। সেই ২০১৩ আসরের কথা সেটি। ততদিনে যদিও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯টি ম্যাচ তিনি খেলে ফেলেছেন ঢাকা মেট্রোর হয়ে। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক হয়ে গেছে অ্যালেক্স হেলস, জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টোদের ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে।
উঠতি পেসার হিসেবে কিছুটা পরিচিতিও ততদিনে পেয়ে গেছেন। তবে সত্যিকার অর্থে সাড়া জাগান বিপিএল দিয়ে। চিটাগং কিংসের হয়ে বিপিএল অভিষেকে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। পরের ম্যাচেই গতির ঝড় তুলে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে। দারুণভাবে নজরও কেড়েছিলেন সেই ম্যাচ দিয়েই। পরের বছর তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। সাফল্য-ব্যর্থতা, চোটাঘাত আর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখন তিনি দেশের মূল পেসারদের একজন।
বুধবার বিপিএলে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতাও তার হয়ে গেল দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে। মূল অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনের হাঁটুর ব্যথার কারণে টস করেন তাসকিন। দুর্দান্ত ঢাকার সহ-অধিনায়ক মনোনীত হওয়ার পর বিপিএল শুরুর ঠিক আগে সংবাদ সম্মেলনে লাজুক মুখে অনুভূতির কথা শুনিয়েছিলেন তাসকিন। একদিন দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্নের কথাও বলেছিলেন। বিপিএলে নেতৃত্বের অভিষেকটা যদিও ভালো হয়নি তার। হেরে গেছে তার দল। তিনি নিজে বল হাতে ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। তবু সব মিলিয়ে এই অভিজ্ঞতায় ভালোর উপকরণই বেশি দেখেন তাসকিন। ভবিষ্যতের সঞ্চয়ও জমেছে বলে মনে করেন তিনি।
“অধিনায়কত্বের প্রথম অভিজ্ঞতা ভালোই ছিল। মাঠে অনেক কিছুতে মনোযোগ দিতে হয়েছে। তাড়াতাড়ি বদল করতে হয়েছে, নিজেকে দ্রুত প্রস্তুত হতে হয়েছে। ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা ছিল।” “চাপ তো সবসময়ই থাকে। একটা ভালো ব্যাপার যে, অনেক দিকে ফোকাস রাখতে হয়। এতে ম্যাচ সচেতনতা বা খেলার বোধ আরও ভালো হবে আশা করি। নিজের ভবিষ্যতের জন্য তা ভালো।” ঢাকার ব্যাটিংয়ের প্রথম ভাগ এ দিন দারুণ ছিল। ১০ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৮২। সেখান থেকে ১৬০-১৭০ রানের আশা করা যায় অনায়াসেই। কিন্তু পরের ভাগে মুখ থুবড়ে পড়ে তাদের ব্যাটিং। শেষ ১০ ওভারে তারা ৭ উইকেট হারিয়ে যোগ করতে পারে স্রেফ আর ৪২ রান। ১২৪ রানের পুঁজি নিয়েও দারুণ লড়াই করে তারা।
কিন্তু এই রানে তো ম্যাচ জেতা কঠিন! ৪ উইকেটে জিতে যা সিলেট। সেই আক্ষেপই ফুটে উঠল তাসকিনের কণ্ঠে। “ব্যাটিংয়ের প্রথম ১০ ওভার আশাবাদীও ছিলাম যে, আজকে মনে হয় ভালো একটা সংগ্রহ হবে, হয়তো জিততে পারব। পরে দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে গেলাম। এটাই আর কী।” তাসকিনের নিজের পারফরম্যান্সেও ভাটার টান। প্রথম পাঁচ ম্যাচে উইকেট পাঁচটি পেলেও বেশ আটঁসাঁট বোলিং করেছিলেন। কিন্তু এরপর টানা দুই ম্যাচে খরুচে বোলিংয়ে উইকেটের দেখা পেলেন না। এ ক্ষেত্রে তিনি একটু ভাগ্যের ছোঁয়া পাওয়ার আশায় আছেন। “বোলিংয়ে একটু দুর্ভাগা ছিলাম। ছন্দও পুরোপুরি পাইনি। আশা করি ঠিক হয়ে যাবে। উইকেট পেতে একটু ভাগ্যও লাগে আসলে। আশা করি, সামনে ভালো হবে।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা