অনলাইন ডেস্ক :
ঠিক কী বিবেচনা করে জাতীয় দলের নির্বাচকরা দল বানান, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। কুমিল্লার ব্যাটার জাকের আলী জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ায় এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার মতে, কালো বলেই জাকের আলীর দিকে চোখ পড়ে না সংশ্লিষ্টদের! বিপিএলে এবার অপ্রতিরোধ্য কুমিল্লা। তারকা বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেশি ক্রিকেটারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে একের পর এক জয় তুলে নিচ্ছে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে মিডল অর্ডার ব্যাটার জাকেরের দায়িত্বশীল ব্যাটিং প্রশংসা কুড়াচ্ছে। এই উইকেটকিপার ব্যাটারকে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজের টি-টোয়েন্টি দলে প্রত্যাশা করেছিলেন সালাউদ্দিন। সুযোগ না পাওয়ায় সালাউদ্দিন অভিযোগ করেছেন, জাকের কালো বলে তাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে বুধবার ৭ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা। এ দিন পাঁচে নেমে জাকের ৩১ বলে ৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন।
শুধু এদিনই নয়, প্রতি ম্যাচেই কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে তার অবদান ধারাবাহিক। এখন পর্যন্ত ১৩৪ স্ট্রাইক রেটে ৬৭ গড়ে ১৪৯ রান এসেছে জাকেরের ব্যাট থেকে। জাতীয় দলে এই ব্যাটারকে না দেখে ক্ষুব্ধ সালাউদ্দিন এভাবেই বললেন, ‘জাকেরের কথাটা সবসময় আপনারা ভুলে যান, কেউ কিছু জিজ্ঞেসও করেন না। ছেলেটার হয়তো চেহারা একটু কালো, এই কারণে আমার মনে হয় বোর্ডও তাকে দেখে না ঠিকমতো। আপনারা ছয় নম্বর, সাত নম্বরে প্লেয়ার খুঁজেন। এই ছেলেটা লাস্ট কয়েকটা ম্যাচ থেকে খুবই ভালো খেলছে। তার স্ট্রাইক রেট যদি দেখেন, আর সে প্রতিটা দিনই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রানটা করে দিচ্ছে এবং সে অনেক সেন্সিবল।’
সালাউদ্দিনের মতে মিডল অর্ডারে বাংলাদেশ দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতেন জাকের, ‘আমি গত বুধবার বাংলাদেশ টিম দেখলাম। আপনি ৫ টা ওপেনার রাখছেন, মিডল অর্ডারে ২ টা ব্যাটসম্যান মনে হয়। একটা সুবিধা আছে হয়তো, সবসময় বাংলাদেশ ওপেনিংই করবে, ১৬-১৭ ওভার পর্যন্ত ওপেন করবে, এটা একটা সুবিধা হতে পারে। তবে রাইট জায়গায় রাইট প্লেয়ার পিক করাটা খুব জরুরি।’ মিডল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহর পর জাকেরকেই এই পজিশনে সেরা ব্যাটার হিসেবে দেখেন কুমিল্লার এই কোচ, ‘আমার মনে হয় এই পজিশনের জন্য (মিডল অর্ডারে) সে (জাকের) বাংলাদেশে ওয়ান অব দ্য বেস্ট।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরে আমি যদি কোন ছেলেকে দেখি, তাহলে মনে হয় এই ছেলেটা সেরা। কারণ প্রতিদিনই সে আমাদের বাঁচাচ্ছে, প্রায়ই একটা ভালো জায়গায় নিয়ে আসছে। খুব সেন্সিবল ব্যাটিং করে। এমন নয় যে তার হাতে শট নেই। সে চারদিকেই মারতে পারে, পেসে ভালো, স্পিনেও ভালো। তাছাড়া রেকর্ডও ভালো। এ ধরনের ছেলেকে সুযোগ দেওয়া উচিত।’ শুধু জাকের নয়, নির্বাচকদের দল গঠনের প্রসেস নিয়ে সন্তুষ্ট নন কুমিল্লার এই কোচ, ‘তারা কী বুঝে টিম বানান আমি বুঝি না। আপনি যেটা বললেন সেটাই হতে পারে। হয়তো রান দেখেৃওপর দিকে অনেক রান করেছে, টিমে নিয়ে নিয়েছি। কিন্তু একটা ছেলে যখন পাঁচ নম্বরে ব্যাট করে, সে ৫০ করবে না। সে ২০ রান করবে। হয়তো ৫ বলে ২০ রান করবে। দল জিতবে না হয় হারবে। ওইভাবে দলটা করলে ভালো হবে।’
জাকেরকে দলে না দেখে হতাশ হলেও কুমিল্লার স্পিনার আলিস আল ইসলামের সুযোগে খুব একটা সন্তুষ্ট নন সালাউদ্দিন। তার মতে আলিসকে আরও পরে ডাকা উচিত ছিল, ‘হয়তো একটা রহস্যময় বোলার খুঁজছে। কিন্তু আরেকটু সময় নিয়ে ডাকলে ভালো হতো। ছেলেটাকে আরেকটু ম্যাচ খেলিয়েসে হয়তো নাও খেলতে পারে। পরিকল্পনায় আছে হয়তো তাই রেখেছে। তবে আরেকটু প্রমাণ করে এলে ভালো হতো।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা