September 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, July 3rd, 2024, 7:38 pm

বাংলাদেশে দ্রুত শিল্পায়নে চীনকে প্রয়োজন: শাহরিয়ার আলম

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, দ্রুত শিল্পায়নের জন্য চীনকে বাংলাদেশের প্রয়োজন। গত ১৫ বছরে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

গত এক দশকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক গভীর হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিল্পোন্নত বাংলাদেশের জন্য চীনকে প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, গত এক দশকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) এক গোলটেবিল আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্যে শাহরিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক সত্যের কথা স্মরণ করেন। পাশাপাশি গত দেড় দশকে চীনের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের তুলনা করার কোনো কারণ নেই।

শাহরিয়ার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরকে ঘিরে চলমান অপপ্রচারে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ (বিএফআরএস) আয়োজিত এই আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ।

সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের (সিএ) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান, বিজিএমইএর পরিচালক শামস মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ওক্যাবের সাধারণ সম্পাদক জুলহাস আলম, অধ্যাপক রুমানা ইসলাম, ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব, ডিক্যাবের সাবেক সভাপতি রাহীদ এজাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং সম্ভাব্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সহ চালু করা নতুন বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে।

আলোচনার শুরুতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির।

প্রবন্ধে বলা হয়, ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

এতে বলা হয়, ২০১০ ও ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর দুই দেশের মধ্যে বর্তমান উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্ককে ‘সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করেছে।

ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ২১টি চুক্তি সই হয়। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলসহ বড় বড় প্রকল্পে সহযোগিতা করে অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে চীন। এ পর্যন্ত ২১টি সেতু, ১১টি মহাসড়কসহ ৫৫০ কিলোমিটার সড়ক এবং ২৭টি জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে চীন।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যও বাড়ছে। ২০২০ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে চীন। পরে তা বাড়িয়ে ৯৮ শতাংশ করা হয়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে, চীন ছিল বাংলাদেশের একক বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানির পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও তার সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর খুবই ফলপ্রসূ হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর খুবই ফলপ্রসূ হতে যাচ্ছে।’

চীনের মন্ত্রী বলেছেন, ‘সুতরাং আমাদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে আমাদের দুই দেশের সরকার ও সরকারি সংস্থাগুলো আগামীতে আমাদের দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার জন্য একটি সাধারণ পরিকল্পনা তৈরি করবে।’

তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সম্পর্কের ইতিহাস এবং বন্ধুত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে অত্যন্ত গভীর ও বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।

জিয়ানচাও বলেছিলেন, ‘প্রায় ৫০ বছরে এই বন্ধুত্ব পাকাপোক্ত হয়েছে। যেহেতু আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি অর্জনের অভিযান, ভিশন-২০৪১ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ও দৃঢ় অনুপ্রেরণা ও উৎসাহের অংশীদার চীন।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের আধুনিকায়ন অভিযানে প্রতিবেশী ও অংশীদার হিসেবে চীন একটি ব্র্যান্ড হিসেবে রয়েছে। তাই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের কাঠামোর মধ্যেই আমরা এটা করব।’

—-ইউএনবি