November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 15th, 2024, 7:34 pm

চবি-ষোলশহরে কোটাবিরোধী ছাত্রদের উপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ, আহত ১০

চট্টগ্রাম মহানগরীর ষোলশহর রেল স্টেশনে কোটাবিরোধী অন্দোলনরত শিক্ষাথীদের উপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) বিকাল ৪টা থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এর আগে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা ঝড়ো হয় ষোলশহর রেল ষ্টেশনে।

সংঘর্ষ শুরু পরপরই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যানবাহন বন্ধ ছিল।

এর আগে দুপুরে চবি স্টেশনে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঠেকাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের চাবি কেড়ে নেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা।

আজ ৩টা থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নগরীর ষোলশহর স্টেশনে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়।

এর আগ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

এদিকে, ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাওয়া শাটল ট্রেন আটকে আন্দোলনের এক সমন্বয়কারীকে ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কোটা আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দুপুর আড়াইটায় শাটল ট্রেনে করে শিক্ষার্থীরা ষোলশহর স্টেশনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ইলিয়াসের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাদের লাঠি ও বাঁশ নিয়ে ধাওয়া দেন। অনেকেই ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।

এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে ধরে নিয়ে প্রক্টরের কাছে গিয়ে তার ভর্তি বাতিলের দাবি জানান। ছাত্রলীগের নেতারা শাটল ট্রেনের চালককে জিম্মি করে চাবি ছিনিয়ে নেয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আজ সকালে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন যে দুপুর আড়াইটার সময় শাটল ট্রেনে করে চট্টগ্রাম শহরের ষোলশহর রেলস্টেশনে সমবেত হবেন। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা যাতে শাটল ট্রেনে উঠতে না পারেন, এজন্য ট্রেনের প্রতিটি বগির সামনে ছাত্রলীগ কর্মীরা অবস্থান নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ট্রেনে উঠতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরীর ষোলশহর স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষমান শাটল ট্রেনের চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ট্রেনের চাবি ছিনিয়ে নিয়েছে। এ কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।’

এদিকে, শাটল ট্রেন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

জানতে চাইলে চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, ‘কোটা সংস্কারের পক্ষে যারা আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম। তারা আন্দোলন করুক সেটাতে আমরা একাত্মতা পোষণ করেছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কেউ কটুক্তি করবে সেটা আমরা মেনে নেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রেন আমরা বন্ধ করিনি। তাছাড়া আমরা কোনো হামলাও করিনি। রাফি নিজেই স্বীকার করেছে সে নিজেই মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে।’

—–ইউএনবি