September 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, August 2nd, 2024, 3:49 pm

কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে ফেললেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক

জেলা প্রতিনিধি, সাভার:

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থীদের হত্যা, হামলা, নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে নিজ কার্যালয় থেকে তাঁর ছবি সরিয়ে ফেলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। সাম্প্রতিক এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার অর্জন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানার কার্যালয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে শামীমা সুলতানাকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। তাঁর পেছনে দেয়ালের ওপরের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখা গেলেও পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিল না।

অধ্যাপক শামীমা সুলতানা দি নিউ ন্যাশন-কে ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসন ও ছাত্রলীগ দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। হত্যা করা হয়েছে দুই বছরের অবুঝ শিশু থেকে বয়স্কদের। নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এরপরও বারবার তিনি মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন। তাঁর নির্দেশেই নারকীয় হামলা, হত্যা, নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থী হত্যার মধ্য দিয়ে জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

অধ্যাপক শামীমা সুলতানা আরও বলেন, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য এ মুহূর্তে ঘরে পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নন। তাঁর হাতে অসংখ্য শিক্ষার্থীর রক্ত লেগে আছে। যাঁর জন্য বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান হুমকির মুখে পড়ে যায়, তাঁর ছবি আমার কার্যালয়ে কীভাবে রাখি? শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যাঁর হাত আমার সন্তানের রক্তে রঞ্জিত, তাঁর ছবি আমার দেয়ালে রাখতে চাই না। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যকলাপের কারণে মানুষের হৃদয়ে আর নেই। তাই বঙ্গবন্ধুর ছবি রেখেছি। কিন্তু তাঁর ছবি সরিয়ে ফেলেছি।’

তিনি আরও বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিটি দেয়াল থেকে সরাইনি। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সমস্ত অর্জনকে শেখ হাসিনা গত কয়েকদিনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও অপরাধযজ্ঞের মাধ্যমে ধুলিসাৎ করে দিয়েছেন।

তবে তিনি যদি ছাত্রদের ওপর নারকীয় হামলা, হত্যা, নিপীড়নের ঘটনা বন্ধ করে ছাত্রদের আন্দোলনকে মেনে নিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনে তাহলে আমি আমার নিজের হাতে ফুলের মালা দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গিয়ে দিবো।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রীদের কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।