September 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, August 16th, 2024, 4:58 pm

কুড়িগ্রামে বন্যা-খরায় পাটে ক্ষতি ৫৬ কোটি টাকা

খরা, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় কুড়িগ্রামের কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে পাট, আমন বীজতলা,শাক সবজি ও আউশসহ বিভিন্ন ফসলের হাজার হাজার হেক্টর জমির আবাদ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের পাটের আবাদ। তথ্যমতে জেলায় এবার কৃষিতে ১০৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর এই ক্ষতির পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে পাটে।

ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর ও জিঞ্জিরাম এই পাঁচ আন্তঃসীমান্ত নদীসহ ১৬ নদ নদীর জেলা কুড়িগ্রাম। যার ফলে বন্যাসহ নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখানে লেগেই থাকে। এ বছর এপ্রিল ও মে মাসে বৃষ্টি হয়নি। খরার তীব্রতাও ছিল বেশি। এরপর পুরো জুন মাস ধরে অতিবৃষ্টি হয়েছে। যার পরিমাণ ১ হাজার ১০০ মিলিমিটার বলে জানিয়েছে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস। পরের মাস জুলাইয়ের প্রথম থেকে শুরু হয়েছে বন্যা। দুই সপ্তাহ ধরে বন্যা চললেও এখন পর্যন্ত নিম্নাঞ্চল থেকে পুরোপুরি পানি নেমে যায়নি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সোনালি আঁশখ্যাত পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও খরার কারণে তা অর্জিত হয়নি। আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ২৫৬ হেক্টর জমিতে। এরপর অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ২ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণরুপে নষ্ট হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের কারণে বিচ্ছিন্ন যাত্রাপুর এবং ধরলা নদীর কারণে বিচ্ছিন্ন পাঁচগাছী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানিতে ডুবে থাকায় অনেক জমির পাট গাছ মরে গেছে। চাষিরা সেই পাট গাছ কেটে এনে পাটখড়ি হিসেবে ব্যবহারের জন্য শুকাচ্ছেন। কিছু কিছু চাষি পাট জাগ দিয়ে ফসল ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। তবে যেসব ক্ষেত থেকে পাট পাওয়া গেছে তার উৎপাদন ও মান ভালো হয়নি। ফলে লাভ তো দূরে থাক, আবাদ খরচ তোলা নিয়ে দুঃশ্চিতায় পড়েছেন পাটচাষিরা।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের ঘন শ্যামপুর এলাকার রহিমুদ্দিন নামের একজন কৃষক বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে পাট কাটা যেত। এর মধ্যে বন্যায় পাট তলিয়ে সব গাছ মরে গেছে। এখন খড়ি করা ছাড়া কোন উপায় নাই। তাই পাট কেটে খড়ি হিসেবে শুকাচ্ছি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান জানান, জেলায় এবার ২১ হাজার ৩৪৬ জন কৃষকের ১০ হাজার ২৪০ মেট্রিকটন পাট উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৫৬ কোটি টাকার মতো বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, নিম্নাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রোপা আমন আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি দেরিতে নামলে আগাম রবি ফসল আবাদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

—-ইউএনবি