November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 18th, 2024, 9:04 pm

সিলেটে বন্ধ থাকা সার কারখানায় ফের উৎপাদন শুরু

প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ফের উৎপাদনে ফিরেছে সিলেটের শাহজালাল সার কারখানা। গ্যাস সংকটের কারণে এতদিন ধরে বন্ধ ছিল কারখানাটি।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল)।

এ সময় কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্যাস বাবদ প্রায় ৭৭৯ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড কর্তৃপক্ষ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে সার কারখানাটি উৎপাদনে যেতে পারছিল না। এছাড়া কারখানা বন্ধের আরেকটি কারণ হিসেবে গ্যাসের দাম প্রায় চার গুণ বৃদ্ধিকেও দায়ী করেছে সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসএফসিএল উৎপাদনে যায় ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট। প্রতিদিন ১ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদনে সক্ষমতাসম্পন্ন কারখানাটি গড়ে ১ হাজার ৪৫০ টন উৎপাদন করে আসছিল। কারখানাটিতে সারের সঙ্গে উপজাত হিসেবে তরল অ্যামোনিয়াও উৎপাদন হচ্ছিল।

এসএফসিএল সূত্র থেকে জানা গেছে, শাহজালাল ফার্টিলাইজার সার কারখানা নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখানো হলেও প্রকল্পটি লাভের মুখ দেখেনি। এখন পর্যন্ত কারখানাটি থেকে উৎপাদিত সার বিক্রি করে ৫৫৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হলেও জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কাছে পাওনা ৭৭৯ কোটি টাকা।

সূত্রটি আরও জানায়, জালালাবাদ গ্যাস তাদের সরবরাহ করা গ্যাসের মূল্য চার গুণ বৃদ্ধি করেছে। প্রতি ইউনিট গ্যাস ৪ টাকা থেকে ১৬ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি টন সার উৎপাদনে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা ব্যয় হলেও বিক্রি করা হয় ২৫ হাজার টাকায়। অর্থাৎ প্রতি টনে কোম্পানিকে লোকসান গুনতে হয় ১১ হাজার টাকা। সার বিক্রির ভর্তুকির টাকা কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সমন্বয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

এদিকে, প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর অনেকটা অলৌকিকভাবে গত ৬ আগস্ট থেকে পুনরায় সার কারখানাটি সীমিত পরিসরে উৎপাদনে যায়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন থেকে জালালাবাদ গ্যাস সীমিত পরিসরে গ্যাস সরবরাহ শুরু করায় চাকা ঘুরে কারখানার।

এ প্রসঙ্গে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) গোপাল চন্দ্র ঘোষ জানান, গ্যাস সংকটের কারণে কারখানাটিতে সার উৎপাদন বন্ধ ছিল। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ৬ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখনও চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সরবরাহ করা গ্যাসের ওপরই নির্ভর করছে উৎপাদন।

তিনি আরও জানান, এখনও বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধ হয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভর্তুকির টাকা সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে। সমস্যা সমাধানে আন্তঃমন্ত্রণালয় কাজ করছে। এছাড়া কারখানাটিতে কিছু ‘টেকনিক্যাল প্রবলেম’ রয়েছে। পুরোদমে উৎপাদনে যেতে হলে সেগুলো সারাতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শাহজালাল সারকারখানার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার টন। কিন্তু ১৩ মার্চ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত কারখানাটিতে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টন ইউরিয়া।

——ইউএনবি