ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঁচজন শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে ঐ দুই শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারহানা পারভীন।
গত সোমবার ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির দুই জন ও পঞ্চম শ্রেণির তিন জন ছাত্রীর করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেয়া হয়। মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা শেষে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়।
প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারহানা পারভীন বলেন, শিডিউল অনুযায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করার পর শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নেয়া হয়।
ঠাকুরগাঁও সরকারি শিশু পরিবার বালিকার উপ-তত্তাবধায়ক মোছা. রিক্তা বানু বলেন, গত বৃহস্পতিবার শহরের হাজীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে আরও অনেকের পাশাপাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ জন ছাত্রী জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত শিশু পরিবারের ২৫ জন ছাত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে দেয়া হয়। এরমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ জনসহ মোট ১৩ জন ছাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্ত সবাই আমাদের শিশু পরিবারের সদস্য। রিক্তা বানু বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ১৩ জন ছাত্রীকে আমরা আলাদা ভাবে রেখেছি। তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তারা ভালো আছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার মমতাজ ফেরদৌস বলেন, বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ জন ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আগামী এক সপ্তাহের জন্য ঐ বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিবুল আলম চয়ন বলেন, সরকারি শিশু পরিবার বালিকার ১৩ জন ছাত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আমরা তাদেরকে আলাদাভাবে আইসোলেশনে রেখেছি। এর পাশাপাশি আক্রান্তের দিন থেকেই আমরা তাদের শারীরিক অবস্থা পর্যক্ষেণ করছি। তারা বর্তমানে সুস্থ আছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষা বজায় রেখে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আমরা সব বিদ্যালয়গুলোকে সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। যদি কোন শিক্ষার্থীর করোনার লক্ষণ দেয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তার নমুনা পরীক্ষা করছি।
তিনি বলেন, যেসব বিদ্যালয়ের শ্রেণির শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, আমরা তাৎক্ষণিক সেসব শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রেখেছি এবং তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম