নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের গ্রামাঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যাপক প্রসারে গ্রামের মানুষ সহজেই ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে। যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামের মানুষ এখন সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা জমা রাখার পাশাপাশি ঋণও পাচ্ছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আবার ঋণের অর্থও আদায় করা হচ্ছে। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওসব কর্মকা- বেড়েই চলেছে। আর ওই পরিষেবার মাধ্যমে গ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স পেয়েছে ২৮টি ব্যাংক। গত বছরের জুন পর্যন্ত ছিল ২৩টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম চালালেও গত এক বছরে আরো ৫টি ব্যাংক লাইসেন্স পেয়েছে। গত বছরের জুনে এজেন্টের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৭৬৪টি আর চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে ১২ হাজার ৯১২টিতে দাঁড়িয়েছে। এক বছরে ৪৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ এজেন্ট বেড়েছে। আউটলেট গত বছরের জুনে ছিল ১২ হাজার ৪৪৯টি আর চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৪৫টি। এক বছরে বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। একই সময়ে হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২২ লাখ। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। তার মধ্যে গ্রামে বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। ওসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গত এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ১০০ ভাগ আমানত সংগ্রহ বেড়েছে। পাশাপাশি ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৩৪২ শতাংশ এবং রেমিট্যান্স বিতরণ ১৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের শহরগুলোতে গ্রাহকরা শাখা থেকেই বেশি ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছে। তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকের শাখা সংখ্যা কম হওয়ায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসার ঘটছে। এখন দেশের অনেক বাজারেই এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে গ্রামে এজেন্ট বেড়েছে ৮৬ শতাংশ আর শহরে বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আউটলেট গ্রামে বেড়েছে ৮৭ শতাংশ এবং শহরে বেড়েছে ১৩ শতাংশ। গ্রাহকের সংখ্যা গ্রামে বেড়েছে ৮৬ শতাংশ এবং শহরে বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের হিসাবের মধ্যে সঞ্চয়ী হিসাব সবচেয়ে বেশি। মোট হিসাবের মধ্যে সাড়ে ৮৫ শতাংশ সঞ্চয়ী, চলতি হিসাব আড়াই শতাংশ এবং ২০ শতাংশ অন্যান্য হিসাব। রেমিট্যান্সের মধ্যে গ্রামে বিতরণ করা হয়েছে ৯১ শতাংশ এবং শহরে ৯ শতাংশ।
সূত্র আরো জানায়, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় শীর্ষে রয়েছে ব্যাংক এশিয়ার ২৭ দশমিক ২২ শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৭ শতাংশ, তৃতীয় অবস্থানে ইসলামী ব্যাংকের ১৪ শতাংশ, চতুর্থ সিটি ব্যাংকের সাড়ে ৭ শতাংশ এবং পঞ্চম অবস্থানে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাড়ে ৩ শতাংশ আউটলেট রয়েছে। হিসাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে ব্যাংক এশিয়ার ৩৬ শতাংশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৩৩ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের সাড়ে ১৫ শতাংশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সাড়ে ৩ শতাংশ এবং অগ্রণী ব্যাংকের প্রায় ৩ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি আমানত সংগ্রহ করে ইসলামী ব্যাংক সাড়ে ৩৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ১৫ শতাংশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১৫ শতাংশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ১৩ শতাংশ, অগ্রণী ব্যাংক ১১ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করে ব্র্যাক ব্যাংক ৬৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ২০ শতাংশ, সিটি ব্যাংক ১১ শতাংশ, আল-আরাফাহ ব্যাংকের সাড়ে ৩ শতাংশ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আড়াই শতাংশ। তাছাড়া রেমিট্যান্স বিতরণে এগিয়ে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক ৫৫ শতাংশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক সাড়ে ২৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ১১ শতাংশ, আল-আরাফাহ ব্যাংকের সাড়ে ৫ শতাংশ, অগ্রণী ব্যাংকের সাড়ে ৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ