জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জির পান-সুপারী জুম ও বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ড হতে পাথর উত্তোলন। সংশ্লিষ্ট শ্রীপুর বিজিবি নিরব। বিএসএফ কয়েক দফা মৌখিক ভাবে বাঁধা দিলেও পাথর উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। ভারতীয় বিএসএফ যেকোন সময় পাথর উত্তোলনকারীদের উপর গুলি বর্ষণ সহ হামলা করার সম্ভাবনা। ধ্বংসের মুখে আধিবাসী সম্প্রদায়ের খাসিয়াদের পান-সুপারী বাগান। এ যেন দেখার কেউ নেই ?
সরেজমিনে দেখা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর মোকামপুঞ্জি ১২৭৯নং আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলারের সাব পিলার (৩এস-৪এস-৫এস) এলাকা হতে নালা করে পাথর উত্তোলন করছে পাথরখেকু চক্র। সাব পিলার এলাকা জুড়ে নালা খননের কারনে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে আধিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্ধা খাসিয়াদের পান-সুপারী জুম। পাথরখেকু চক্রের শ্রমিকরা দলবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ড হতে পাথর উত্তোলন করে পুঞ্জির ভিতরে নিয়ে এনে পাথর স্তুপ করে রাখে। পরে পুঞ্জির ভিতর হতে ডি.আই ট্রাক যোগে বিভিন্ন পাথার ক্রাশার মিলে সরবরাহ করে।
সরেজমিন পুঞ্জি এলাকায় দীর্ঘ চার ঘন্টা অবস্থান করে দেখা মিলেনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী ৪৮বিজিবি’র শ্রীপুর ক্যাম্পের সদস্যদের। শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, দীর্ঘ দিন হতে শ্রীপুর ও জাফলং কোয়ারী বন্ধ থাকায় আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। কাজের সুযোগ না থাকায় পেটের দায়ে শ্রমিকরা পুঞ্জির ভিতর হতে পাথর উত্তোলন করছে। সেজন্য বিজিবি’র শ্রীপুর ক্যাম্পের সোর্স আজহার মিয়াকে লাইনের টাকা দিয়ে আমরা পাথর উত্তোলন করি।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিকরা আরও বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী নো-ম্যান্স ল্যান্ড হতে পাথর উত্তোলনে বাঁধা দেয়। যেকোন মুহুত্বে হামলা এমনকি গুলি করেতও পারে। তারপরও জিবিকার তাগিদে আত্মংকের মধ্যে আমরা পাথর উত্তোলন করি। আপনারা আসছেন দেখে যান কিন্তু কোন প্রকার ছবি তোলবেন না। ছবি তুললে বিজিবি আমাদের কাজ করতে দিবে না।
বিজিবি’র সোর্সম্যান নামে পরিচিত আযহার মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে আলাপকালে পাথর উত্তোলন ও টাকা নেওয়ার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, সপ্তাহপূর্বে কয়েকজন শ্রমিক পাথর উত্তোলন করেছে এখন বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন লেখালেখি করে কি লাভ ? কাজ কর্ম নাই শ্রমিকরা কেমনে বাঁচবে, পাথর নিতে দিন।
শ্রীপুর বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার ইব্রাহীম পাথর উত্তোলনে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মোকামপুঞ্জির ভিতর হতে পাথর উত্তোলন হচ্ছে আমার জানা নেই। আযহার নামে আমাদের কোন সোর্স নেই। পাথর উত্তোলনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুসরাত আজমেরী হক বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি