November 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, October 5th, 2021, 8:41 pm

ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকরের পর দুই আসামিকে পাশাপাশি দাফন

ফাইল ছবি

জেলা প্রতিনিধি:

ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের পর দুই আসামি আজিজুল ও মিন্টুর লাশ নিজ গ্রামে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সকালে জানাজার পর গ্রামের কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়। তাদের জানাজায় এলাকার অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। লাশ দাফনের আগ মুহূর্তে বৃষ্টিতে দাফনকাজে বিঘ্ন ঘটে। সকালে আশপাশ গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ মিন্টু ও আজিজের বাড়িতে আসেন। কেউ কেউ দেখতে যান তাদের কবর। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলায় মৃতুদ-প্রাপ্ত একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুল (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালুর (৫০) ফাঁসি কার্যকর হয় গত সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে। দুজনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পৃথক অ্যাম্বুলেন্সযোগে পুলিশ প্রহরায় দুজনের লাশ নিয়ে রওনা দেন স্বজনরা। রাত আড়াইটার দিকে তারা আলমডাঙ্গার নিজগ্রাম রায়লক্ষ্মীপুরে পৌঁছান। ফজর নামাজ শেষে মসজিদের সামনের ফাঁকা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। আজিজ ও মিন্টুর লাশ সামনে রেখে একই সঙ্গে জানাজা পড়ানো হয়। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, চুয়াডাঙ্গার আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দ-প্রাপ্ত দুজনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য কয়েক দিন আগে থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিই। শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো স্বজনরা তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের দুজনের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী দুই পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষের সঙ্গে দেখা করাই। এ ছাড়া তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী শনিবার গরুর কলিজা ও ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়। রোববার গ্রিল ও নান রুটি আর গত সোমবার মুরগির মাংস, দই আর মিষ্টি খাওয়ানো হয়। তিনি আরও বলেন, দুজনের ফাঁসি কার্যকর করার জন্য কারাগারের নিরাপত্তায় সন্ধ্যার পর থেকেই গোটা এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়। ১৩ জন অস্ত্রধারী কারারক্ষী কারাগারে দায়িত্বে ছিলেন। এ ছাড়া পুলিশ ও র‌্যাবের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন কারাগারের প্রধান ফটকে। কারাসূত্রে জানা গেছে, দুই খুনির ফাঁসি কার্যকরে রাতে একে একে কারাগারে প্রবেশ করেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, সিভিল সার্জন দিলীপ শেখ আবু শাহীন ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান। রাতে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত ওই দুই আসামিকে গোসল করানোর পর তাদের তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম। রাতেই স্বজনদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের পর তাদের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। পরে তাদের জমটুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়। গত সোমবার রাত পৌনে ১১টায় প্রথমে মিন্টু ওরফে কালু এবং এর পাঁচ মিনিট পর একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরে জল্লাদ কেতু কামার, মশিয়ার রহমান, লিটু হোসেন, আজিজুর রহমান ও কাদের অংশ নেন। ফাঁসি কার্যকরের পর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসক টিম তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর ফরেনসিক টিম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার পর লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।