November 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, December 31st, 2021, 7:56 pm

নারী দলকে জমকালো সংবর্ধনা দিলো বসুন্ধরা গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক :

ছেলেদের ফুটবল রং হারিয়েছে অনেক দিন। তবে বছরজুড়েই মুখে হাসি ফুটিয়েছেন নারী ক্রীড়াবিদরা। নারীদের ক্রিকেট দল আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সদ্যই অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দল। নারীর এই অর্জনকে অনুপ্রাণিত করতে গতকাল অনূর্ধ্ব-১৯ সাফজয়ী নারী দলকে জমকালো সংবর্ধনা দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভবিষ্যতের পথচলায় নারী ফুটবল দলের সহযাত্রী হওয়ার। আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার পুষ্পগুচ্ছ হলে যেন এক তোড়া ফুলের দেখাই মিলেছিল কাল। কিছুদিন আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। বসুন্ধরা গ্রুপের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান কাল তাঁরাই সুরভিত করে তুলেছেন। প্রত্যেক ফুটবলার ও কোচিং স্টাফকে এক লাখ করে টাকা ও সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়েছেন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের পাশে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সারা বছর মেয়েদের ক্যাম্পে রেখে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু সেই ক্যাম্প চালাতে গিয়েই যে সময়ে সময়ে আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেটাও তুলে ধরেছিলেন বাফুফের নারী ফুটবল লিগ কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের ঘোষণা, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো বড় জায়গায় যেতে হলে আরো বড় পৃষ্ঠপোষণ প্রয়োজন। আমি কথা দিলাম, বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের পাশে থাকবে সব সময়।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণায় বসুন্ধরা গ্রুপ ক্রীড়াক্ষেত্রে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘আমরা ১২ বছর আগে কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনে ছিলাম না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ক্রীড়াঙ্গনে চেয়েছেন। এর পরই আমরা একটার পর একটা দলে এসেছি। আমি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান। আমার ছোট ভাই শেখ জামালের প্রেসিডেন্ট, বসুন্ধরা কিংস, রংপুর রাইডার্স নামে আমরা দল করেছি। তরুণদের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই, এটা আমরা বিশ্বাস করি।’ অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ শিরোপাজয়ী দলকে সংবর্ধনা দেওয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী, ‘মেয়েদের জন্য এই আয়োজন আগামীর পথচলায় তাদের আরো সাহস জোগাবে বলে আমার বিশ্বাস। বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ। মেয়েরা কঠোর পরিশ্রম করে এই শিরোপা এনেছে। সব কৃতিত্ব তাদেরই।’ খেলোয়াড়রাও অনুপ্রাণিত এমন সংবর্ধনায়। লেফট ব্যাক শামসুন্নাহার যেমন বলেছেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ পাশে থাকলে আগামীতে আরো শিরোপা এনে দিতে পারব আমরা।’ স্বাগত বক্তব্যে বসুন্ধরা গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসানও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী আরো উজ্জ্বল করেছ তোমরা এই অর্জনে।’ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন মেয়েদের অভিনন্দিত করার পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রে বসুন্ধরার অবদানও তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম মেয়েদের উৎসাহিত করেছেন ‘তোমাদের দক্ষিণ এশিয়া, এশিয়া ছাড়িয়ে বিশ্বদরবারে দেখতে চাই’ বলে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছেন ক্রীড়া লেখক ও কলামিস্ট ইকরামউজ্জামান। ‘ক্রীড়াক্ষেত্রে বসুন্ধরা গ্রুপ বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে’ উল্লেখ করে তাদের এই উদ্যোগ ধরে রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে সাফজয়ী মেয়েদের সঙ্গে এসেছিলেন ক্যাম্পে থাকা অন্য নারী ফুটবলাররাও। ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য। ইমরুল হাসান নিজেও বাফুফের বর্তমান সহসভাপতি। মেয়েদের অভিনন্দিত করতে বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সব ফুটবলারও এদিন সংবর্ধনায় এসেছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা বড়দিনের ছুটিতে থাকায় অবশ্য আসতে পারেননি এই সংবর্ধনায়। তা ছাড়া মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, ফাইনালের একমাত্র গোলদাতা আনাই মোগিনি, শামসুন্নাহার, আসরের সেরা খেলোয়াড় শাহেদা আক্তারসহ শিরোপাজয়ী সব খেলোয়াড়ই এসেছেন এই সংবর্ধনায়। ফাইনাল জয়ের উচ্ছ্বাসের মতোই আনন্দ খেলা করছিল তাঁদের সবার মুখে।