নিজস্ব প্রতিবেদক:
টেস্টে বিশ^ চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের জয়রথ থামলো বাংলাদেশে। বুধবার (৫ জানুয়ারী) মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর বাংলাদেশের কাছে হারলো কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথম জয়ে ইতিহাসও গড়লো বাংলাদেশ। আগের ৩২ ম্যাচই হেরেছিলো টাইগাররা। হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বইয়ে অনেক কিছুই পাল্টে দিয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম হলেও টেস্টে বিদেশের মাটিতে ষষ্ঠ জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দু’বার করে এবং শ্রীলংকার বিপক্ষে একবার ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস সৃষ্টির পেছনে বড় অবদান পেসার এবাদত হোসেনের। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। টেস্টে বাংলাদেশের আরও তিন পেসারের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬টি করে শিকার রয়েছে। তারা হলেন- শাহাদাত হোসেন, রবিউল ইসলাম ও মঞ্জরুল ইসলাম। তবে ২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে সেরার দৌঁড়ে সবার উপরে শাহাদাত। ২০০৮ সালে ঢাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫ দশমিক ৩ ওভার বল করে ২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত। আর এবাদতের বোলিং ফিগার ২১ ওভারে ৪৬ রানে ৬ উইকেট। তাই টেস্টে বাংলাদেশের কোন পেসারের ইনিংসে এটি দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। ২০১৩ সালের পর বাংলাদেশের হয়ে টেস্টের এক ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়া পেসার এবাদত। সর্বশেষ ২০১৩ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯ ওভারে ৭১ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রবিউল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ রানে শেষ আট উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন দলের এটাই সর্বোচ্চ লজ্জার চিত্র। এতোদিন এই তালিকায় শীর্ষে ছিলো ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালে ঢাকায় ৪০ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছিলো ইংলিশরা। ঐ টেস্টটি ১০৮ রানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। মাউন্ড মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড গড়লো পেসাররা। পুরো টেস্টে এবাদত-তাসকিন-শরিফুল মিলে ১৩ উইকেট নিয়েছেন। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট নেয়ার নয়া রেকর্ড এটি। এর আগে এমন রেকর্ডটি করেছিলেন রুবেল হোসেন ও রবিউল ইসলাম। ২০১৩ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে রবিউল ৩টি ও রুবেল ২টি উইকেট নিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে রবিউল নেন ৬ উইকেট। ফলে ম্যাচে বাংলাদেশের দুই পেসার রবিউল ও রুবেলের একত্রে শিকার ছিলো ১১ উইকেট। ম্যাচে ১৩ উইকেটের ৯টিই আসে দ্বিতীয় ইনিংসে। এজন্য ৪৭ ওভারে ১১২ রান খরচ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এটিই তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে। এর আগেও টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনবার পেসাররা ৯টি করে উইকেট নিয়েছিলেন। তবে সেগুলো ছিলো যথাক্রমে- ২৭০, ৩২০ ও ৩৭১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এটিই সর্বনি¤œ রান কিউইদের। আগের সর্বনি¤œ রানটি ছিলো ১৭১ রানের। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে সেটি করেছিলো নিউজিল্যান্ড। উত্তেজনাপূর্ণ ঐ টেস্টটি ৩ উইকেটে হেরেছিলো টাইগাররা। এশিয়ার বাইরে নিউজিল্যান্ডের ১৬৯ রান দ্বিতীয় সর্বনি¤œ স্কোর। সর্বনি¤œ হলো ১২৯ রান। ২০১৮ সালে কিংস্টনে ১২৯ রানে গুটিয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারপরও ম্যাচটি ১৬৬ রানে হেরেছিলো বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা