নিজস্ব প্রতিবেদক :
বকেয়া প্রায় ৪০ কোটি টাকা দ্রুত পরিশোধের দাবিতে রাজধানীর ৩০টি আবাসিক হোটেলের মালিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। পরে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি গ্রহণ করে তাদের বিল প্রদানে আশ্বস্ত করেন হাসপাতালের পরিচালক। তিনি বলেছেন, কিছু নিয়মকানুনের কারণে বিল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। এ ব্যাপারে তার আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। জানা গেছে, গত বছর ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের বিভিন্ন হোটেলে আবাসন (কোয়ারেন্টাইন) ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএইচএ) সঙ্গে চুক্তি হয়। বিআইএইচএ’র অধীনে ৩০টি হোটেলে তাদের আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। চুক্তির শর্তানুসারে প্রতি ১০ দিন পরপর ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিল দাখিল ও সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিল পরিশোধের কথা থাকলেও সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হয়নি। বিআইএইচএ নেতাদের অভিযোগ, রাজধানীর ৩০টি হোটেলে বকেয়া পাওনার পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তারা গত বছরের আগস্টে জুলাই মাসের বিল ও সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে আগস্টের বিল দাখিল করেন। কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও টাকা পাননি। তারা জানান, গত ৩০ মার্চ ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যয় মঞ্জুরি চেয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বরাবর আবেদন করলেও এখনো চিঠি চালাচালি চলছে। বিআইএইচএ’র কর্মকর্তা তথা ৩০টি হোটেল কর্তৃপক্ষ ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ে বারবার ধরনা দিলেও বিল পরিশোধ করা হয়নি। তারা জানান, ২০২০-২১ অর্থবছর ৩০ জুন শেষ হচ্ছে, তাই চলতি জুনের মধ্যে প্রাপ্য বিল পরিশোধ করা না হলে কোয়ারেন্টাইন এক্সপেন্সের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত চলে যাবে। এটিই উদ্বেগের প্রধান কারণ উল্লেখ করে তারা বলেন, গত বছরের জুলাই মাসের দাবিকৃত ন্যায্য বিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৮ জানুয়ারি বরাদ্দের পরও তাদের হাতে পৌঁছায়নি। তদুপরি গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরের প্রাপ্য বিল যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ হয়নি। এ বিল কীভাবে পাবো তা আমাদের জানা নেই। হোটেল মালিকরা গত জুলাইয়ের বিল চলতি বছরের জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ এবং আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের বিল পরিশোধের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে অনতিবিলম্বে পরিশোধের জোর দাবি জানান। তারা জানান, করোনাকালে যখন পরিবার-পরিজনও বাড়িতে অবস্থান করতে দিতে ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত ছিল, তখন হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এর পরও তারা ন্যায্য বিল পাচ্ছেন না। ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হোসেন স্মারকলিপি গ্রহণ করে বলেন, গত বছরের কিছু বিল নিয়ে অডিট আপত্তির কারণে তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিলগুলো খতিয়ে দেখছেন। তিনি হোটেল মালিকদের যত দ্রুত সম্ভব বিল পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি