অনলাইন ডেস্ক :
ইউক্রেনকে সামরিক দিক থেকে পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যে অভিযানের গোড়া থেকেই বায়ুসেনাঘাঁটি, সেনাঘাঁটি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রগুলিতে প্রতিনিয়তই বিমান হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তারপর থেকেই লাগাতার রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন প্রান্তে সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে রুশ সেনা। রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি বোমাবর্ষণ চলছে সমানতালে। চারপাশ থেকে ইউক্রেনকে ঘিরে ফেললেও প্রতিরোধ গড়ে লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে সীমান্ত এলাকা ঢুকে পড়েছে রুশ সেনা। নিজেদের দুর্গ কতক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারবে ইউক্রেন সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন যখন একটু একটু করে পাকতে শুরু করেছে, হামলার পুরোদস্তুর প্রস্তুতি নিয়ে ইউক্রেন সীমান্তে কয়েক লাখ সেনা পাঠিয়ে দিয়েছিল রাশিয়া। শুধু নির্দেশের অপেক্ষা ছিল। গত বৃহস্পতিবার দেশের প্রেসিডেন্টের থেকে সেই নির্দেশ পেতেই ভূমি, আকাশ সবদিক থেকেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্রবর্জন করার হুমকি দেন পুতিন। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কোনোভাবেই রাশিয়ার হাতে নিজেদের ভূখ- তুলে দেবে না। তার জন্য যত প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় তা করা হবে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার-এর মতে, বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে সামরিক শক্তির দিক থেকে ইউক্রেন ২২ নম্বরে। সেখানে রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিধর দেশ। সেখানে সামরিক শক্তিতে ধারেভারে রাশিয়ার থেকে বহু যোজন দূরে ইউক্রেন। একবার দেখে নেওয়া যাক দু’দেশের সামরিক অস্ত্রভান্ডারের অন্দরের অবস্থা। সেনার সংখ্যা যদি বিচার করা হয় তাহলে ইউক্রেনের থেকে চার গুণ বেশি রয়েছে রাশিয়ার। ইউক্রেনের যেখানে আড়াই লাখ সেনা রয়েছে, সেখানে রাশিয়ার মোট সেনা সংখ্যা সাড়ে আট লাখের বেশি। স্বাভাবিকভাবেই সামরিক শক্তিতে অনেক এগিয়ে রাশিয়া। ইউক্রেনের বায়ুসেনা অত্যন্ত দক্ষ। কিন্তু সংখ্যায় রাশিয়ার ধারেকাছে নেই তারা। রাশিয়ার যেখানে মোট চার হাজার ১০০টি সেনাবিমান রয়েছে, ৭৭২টি যুদ্ধবিমান, সেখানে ইউক্রেনের মাত্র ৩১৮টি সেনাবিমান। যার মধ্যে ৬৯টি যুদ্ধবিমান। সাঁজোয়া গাড়ি এবং ট্যাঙ্কের সংখ্যাতেও পিছিয়ে ইউক্রেন। রাশিয়ার হাতে রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার ট্যাঙ্ক ৩০ হাজার সাঁজোয়া গাড়ি। অন্য দিকে, ইউক্রেনের সেখানে দু’হাজার ৬০০ ট্যাঙ্ক এবং ১২ হাজার সাঁজোয়া গাড়ি। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে বিষয়টি তা হল, রাশিয়ার হাতে রয়েছে ‘ফাদার অব অল বম্বস’ সংক্ষেপে যাকে এফওএবি বলা হয়। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট দাবি করা হয়েছে, পুতিন এই বোমা ফেলার পরিকল্পনা করছেন। যদি এই বোমা ফেলা হয় তার অভিঘাত যে কতটা মারাত্মক হবে তা কল্পনার বাইরে। এই বোমার ফাটার পর তার থেকে সৃষ্ট শকওয়েভ এবং তাপমাত্রার পরিসর ৩০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু