নিজস্ব প্রতিবেদক:
শক্তিশালী অসাধু সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার। অতি মুনাফার লোভে তারা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। ওই চক্রের কারসাজিতে রোজা আসার আগেই নানা অজুহাতে হু হু করে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম। চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, মাছ-মাংস, আটা-ময়দা, সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের দামই এখন বাড়তি। মূলত আসন্ন রোজা ঘিরে শক্তিশালী অসাধু সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠছে। তারা রোজা শুরুর আড়াই মাস আগেই (জানুয়ারি থেকে) রোজায় ব্যবহৃত পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। ফলে পণ্য কিনতে ভোক্তার এখন থেকেই নাভিশ্বাস বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দুই মাসের ব্যবধানে রমজাননির্ভর পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি ছোলায় ৫-৬ টাকা বেড়েছে। চিনি প্রতি কেজি ৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে বেড়েছে ৮ টাকা। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল ১০ ও ছোট দানার মসুর ডালে ৫-৭ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কারণ ছাড়াই কেজিপ্রতি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ২৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুরেও ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। দুই মাসেই ওই অতিরিক্ত মূল্য বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তা দেখার যেন কেউ নেই। বাজারে তেমন নজরদারি করতেও দেখা যায় না। ফলে যে যেভাবে পারছে ক্রেতার পকেট কাটছে।
সূত্র জানায়, রমজান সামনে রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে কাজ করা হচ্ছে। রমজানে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় সেজন্য সাশ্রয়ী দামে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের একাধিক সংস্থা বাজার তদারকি করবে। পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। জেলায় জেলায় দাম মনিটরিংয়ে ডিসিদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা মুনাফালোভী এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান জানান, রমজান আসার আগেই ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ওই কারণে আগেভাগেই সংস্থাগুলোর মনিটরিংও করতে হবে। কঠোর তদারকির মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অযৌক্তিক মুনাফা করতে ব্যবসায়ীরা সময় ও সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়ায়। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। রমজানকে টার্গেট করে বিশেষভাবে মার্চ থেকে তদারকি করা হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। দরকার হলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি