যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক নিরাপদে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। তবে দেশে ফিরতে পারলেও সহকর্মী হারানো ও যুদ্ধের মানসিক আঘাত তাদের দীর্ঘদিন ভুগাবে।
ইউক্রেন ফেরত ২৮ নাবিকের একজন হলেন মনসুরুল আমিন খান গিনি। বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় তিনি বাড়ি ফেরেন। তার ফিরে আসায় সাতক্ষীরা শহরের ‘এখানেই নোঙর’ বাড়িটি যেন আলো ঝলমল হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে দূর হয়েছে পরিবারের সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও হতাশা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের মধ্যে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৯ জন নাবিকসহ ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে এবং ২ মার্চ জাহাজে বোমার আঘাতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি নাবিক হাদিসুর রহমান।
মনসুরুল আমিন বলেন, ‘২ মার্চ স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠি আমরা। উপরে গিয়ে দেখি বিস্ফোরণ হয়েছে। ধোঁয়া উড়ছে, আগুন জ্বলছে। আমরা দ্রুত আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করলেও হারিয়েছি আমাদের সহকর্মীকে। তাকে রেখেই আমাদের দেশে ফিরতে হলো।’
ইউক্রেনে অলিভিয়া বন্দরে নোঙর করা ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র নাবিকরা এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে একটি নৌকা এসে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। নিরাপদ স্থানে রাখার পর অধিকতর নিরাপত্তার জন্য তাদের রাখা হয় বাংকারে।
‘আমরা আগুন দেখেছি, জাহাজ বিধ্বস্ত হতে দেখেছি, আমরা মৃত্যু দেখেছি’ এমন মন্তব্য করে মনসুরুল আমিন বলেন, ‘সে দৃশ্য ভয়াবহ। চারদিকে বিকট শব্দ। আকাশজুড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। বাড়িতে মাঝেমধ্যে ম্যাসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু আতঙ্ক আর হতাশা কিছুতেই পিছু ছাড়েনি। তবু ভরসা ছিল একদিন বাড়ি ফিরবোই।’
তিনি জানান, এ সময় তারা শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। সরকার, শিপিং কর্পোরেশন ও রোমানিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাসের আন্তরিক চেষ্টায় তারা সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসতে পারায় তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই নাবিক।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি