অনলাইন ডেস্ক :
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে বেশ কয়েক দফা বৈঠকে বসেছে কিয়েভ ও মস্কো। রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় আসতে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে ইউক্রেন। অন্যদিকে রাশিয়ার দাবিও জোরাল হয়েছে। খবর বিবিসির।
ছয় দাবিতে অনড় ইউক্রেন
১. যুদ্ধের অবসান ঘটানো,
২. নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা ,
৩. সার্বভৌমত্ব,
৪. ইউক্রেনের ভূখ- অক্ষুণœ রাখা,
৫. ইউক্রেনের প্রকৃত নিশ্চয়তা ও
৬. প্রকৃত সুরক্ষা।
মূলত নিজেকে সুরক্ষিত রাখার নিশ্চয়তাই ইউক্রেনের পূর্বশর্ত। গত বুধবার দেশটির শীর্ষ আলোচক মিখাইলো পোডোলক বলেন, ইউক্রেন বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধাবস্থায় আছে। আন্তর্জাতিক বাহিনীর মাধ্যমে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জিম্মা প্রয়োজন।রাশিয়ার দাবি
১. ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য না হওয়া,
২. ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখ- স্বীকৃতি দেওয়া এবং
৩. দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়া।
এ বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, একটি সম্ভাব্য চুক্তির কয়েকটি ক্ষেত্রে সম্মত হওয়ার কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। নিরপেক্ষতা নীতিতে আলোচনা চলার আভাস রয়েছে।
জেলেনস্কির দাবি : জেলেনস্কি তার সর্বশেষ ভাষণে দাবি করেন, ইউক্রেনে রাশিয়া এত বেশি সেনা হারিয়েছে, সিরিয়া, চেচনিয়া, এমনকি আফগান যুদ্ধেও এত সোভিয়েত সেনা হতাহত হননি। রাশিয়াকে মোকাবিলায় শুরু থেকেই ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন জেলেনস্কি। সেই সঙ্গে তার দেশে আরও বিমান পাঠানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এখনও ইউক্রেনে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করতে সম্মত হয়নি। এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে সন্ত্রাসী ও রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।রুশ প্রস্তাব ও ইউক্রেনের অবস্থান অস্ট্রিয়া ও সুইডেনের মতো নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছিল রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনও ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে কথা বলেছেন। ন্যাটোর সম্প্রসারণ ছাড়াই ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে চাচ্ছেন তিনি। গেল ফেব্রুয়ারিতে এ সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা হয়েছিল। আরবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার সঙ্গে ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’ নিয়েও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কিয়েভ ‘নিরপেক্ষ অবস্থানে’ যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। রেকর্ড রুশ সেনা নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। অবশ্য ইউক্রেনের দাবি, এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। গত বুধবার আল জাজিরার প্রতিবেদন জানানো হয়েছিল, ইউক্রেনে ১৩ হাজার ৮০০ সেনা হারিয়েছে রুশ বাহিনী। এ ছাড়া তাদের ৪৩০টি ট্যাংক ও ৮৪টি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ। আফগান যুদ্ধে (১৯৭৯ থেকে ৮৯) প্রায় ১৫ হাজার সোভিয়েত সেনা নিহত হন। চেচনিয়ার যুদ্ধে মারা যান কমপক্ষে ১৩ হাজার রুশ সেনা। সিরিয়ায় নিহত রুশ সেনার সংখ্যা কয়েকশ হতে পারে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু